ফের পর্দায়! ভয়ঙ্কর চরিত্রে ড্যানিয়েল ডে-লুইস, কেমন হলো সিনেমা?

চলচ্চিত্র সমালোচন: ‘অ্যানিমোন’-এ ড্যানিয়েল ডে-লুইসের প্রত্যাবর্তনে মুগ্ধতা, কিন্তু গল্পের গভীরতা কি যথেষ্ট?

বহুদিন পর, রুপালি পর্দায় ফিরে এসেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা ড্যানিয়েল ডে-লুইস। তাঁর পুত্র, রোনান ডে-লুইস পরিচালিত ছবি ‘অ্যানিমোন’-এর হাত ধরে অভিনেতা আবার দর্শকদের সামনে।

সিনেমাটি একদিকে যেমন অভিনেতার অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতা নিয়ে আসে, তেমনই গল্পের গভীরতা নিয়ে তৈরি হয় কিছু প্রশ্ন। ছবির বিষয়বস্তু, দুই ভাইয়ের সম্পর্ক, অতীতের কিছু না-বলা কথা, সব মিলিয়ে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের জন্য এক অন্য অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে।

ছবিটির মূল গল্প দুই ভাই, রে (ড্যানিয়েল ডে-লুইস) এবং জেমকে (শন বিন) কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। তাঁদের শৈশব কেটেছে উত্তর আয়ারল্যান্ডের এক অস্থির সময়ে।

দেশের সেই রাজনৈতিক ডামাডোলে তাঁরা দুজনেই ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। সময়ের সাথে সাথে, এক গভীর আঘাতের কারণে দুই ভাই আলাদা হয়ে যান।

রে বেছে নেন নির্জন জীবন, গভীর জঙ্গলে প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খুঁজে ফেরেন তিনি। অন্যদিকে জেম খুঁজে পান ধর্মের আশ্রয়।

গল্পের মোড় ঘোরে যখন জেমের ছেলে ব্রায়ানের (ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন একজন তরুণ অভিনেতা) জীবনে নেমে আসে বিপদ। ব্রায়ানের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেন জেম।

ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি হাজির হন সেই গভীর জঙ্গলে, যেখানে রে-এর বসবাস। রোনান ডে-লুইস, যিনি মূলত একজন চিত্রশিল্পী, তাঁর পরিচালনায় প্রকৃতির রূপ-রস ফুটিয়ে তুলেছেন, যা ছবির অন্যতম আকর্ষণ।

দৃশ্যগুলো দর্শককে প্রকৃতির রুক্ষ সৌন্দর্য্যের সঙ্গে পরিচিত করায়।

তবে ছবির গভীরতা অনেক সময় দর্শকদের হতাশ করতে পারে। রে-এর অতীতের রহস্য উন্মোচন করতে অনেকটা সময় লেগে যায়।

রে কেন এমন একাকী জীবন বেছে নিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হয়। রে-এর জীবনের কিছু ঘটনা, যা তিনি তাঁর ভাইয়ের কাছে বর্ণনা করেন, তা অত্যন্ত মর্মস্পর্শী।

বিশেষ করে, একটি দৃশ্যে তিনি অতীতের একটি ঘটনার কথা বলতে গিয়ে নিজের অনুশোচনা প্রকাশ করেন, যা ডে-লুইসের অসাধারণ অভিনয় ক্ষমতার প্রমাণ।

ছবিতে অভিনেতা এবং পরিচালক—বাবা ও ছেলের এই যুগলবন্দী দর্শককে মুগ্ধ করে। ড্যানিয়েল ডে-লুইসের অভিনয় নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।

কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে মনে হয়, গল্পের গভীরতা আরও একটু বাড়ানো যেত। ছবিটির বিষয়বস্তু, কিছু দৃশ্যের বর্ণনা এবং ভাষার কারণে এটি সবার জন্য নাও হতে পারে।

সব মিলিয়ে, ‘অ্যানিমোন’ একটি বিশেষ ধরণের সিনেমা, যা একইসঙ্গে দর্শককে মুগ্ধ করে এবং কিছু ক্ষেত্রে হতাশও করে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *