রোনালদো-কেনের কোচ: কীভাবে সফল হলেন অ্যান্থনি বারি?

অ্যান্থনি বারি: মাঠের বাইরে থেকে আসা ফুটবল মস্তিষ্কের উত্থান

ফুটবল বিশ্বে এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা সবসময় প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকেন, কিন্তু তাদের কাজের গভীরতা মাঠের খেলোয়াড়দের থেকেও কোনো অংশে কম নয়। তেমনই একজন হলেন অ্যান্থনি বারি।

বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। খেলোয়াড় জীবন থেকে কোচিংয়ে আসার পথটা তাঁর মসৃণ ছিল না, কিন্তু কঠোর পরিশ্রম আর ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনার মাধ্যমে তিনি আজ ফুটবল বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।

বারির কোচিং জীবনের শুরুটা হয় অপেক্ষাকৃত নিচু স্তরে। খেলোয়াড় হিসেবে খুব বেশি পরিচিতি না পেলেও, খেলাটির প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ছিল।

একবার তিনি একটি গবেষণাপত্রের জন্য ২০১৩-১৪ সালের প্রিমিয়ার লিগের ১৬,১৫৪টি থ্রো-ইন বিশ্লেষণ করেছিলেন! তাঁর এই ডেটা-ভিত্তিক বিশ্লেষণ তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে।

এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘প্রো-লাইসেন্স’ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পান। এরপর তাঁর কাজ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

২০২০ সালে চেলসির তৎকালীন কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড বারিকে তাঁর সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেন।

চেলসিতে থাকাকালীন সময়ে তিনি সেট-পিস নিয়ে কাজ করতেন। তাঁর অধীনে চেলসি দল সেট-পিস থেকে নিয়মিত গোল করতে শুরু করে।

এরপর বায়ার্ন মিউনিখে থমাস টুখেলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান তিনি। সেখানে তিনি হ্যারি কেইন-এর মতো তারকা খেলোয়াড়দের কোচিং করিয়েছেন।

বারির কোচিং দর্শন সবসময়ই খেলোয়াড়-কেন্দ্রিক।

তিনি খেলোয়াড়দের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে, সেগুলোর ওপর কাজ করতেন এবং তাদের সেরাটা বের করে আনতে সাহায্য করতেন।

তাঁর প্রশিক্ষণ সেশনগুলো খেলোয়াড়দের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিল। উইগান এ থাকাকালীন সময়ে তার প্রশিক্ষণ সেশনগুলো এতটাই উন্নত ছিল যে, চেলসির হয়ে খেলা রিস জেমস পর্যন্ত বলেছিলেন, উইগানে বারির অধীনে ট্রেনিং সেশনগুলো চেলসির চেয়েও ভালো ছিল!

বারির কোচিংয়ের সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে খেলোয়াড়দের খেলার ভিডিও দেখতেন এবং তাদের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করতেন।

যারা বারিকে কাছ থেকে দেখেছেন, তারা সবাই তাঁর বিনয়ী স্বভাব ও ফুটবল জ্ঞান নিয়ে মুগ্ধ।

বর্তমানে, বারি ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর প্রধান লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ জেতা।

বারি খেলোয়াড়দের খেলাকে উন্নত করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর এই উত্থান প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক কৌশল একজন মানুষকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *