শিরোনাম: অ্যাপলের ভবিষ্যৎ: টিম কুকের পরিবর্তনে কি দেখছে বিশ্লেষকরা?
গত সপ্তাহে প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা সংস্থা লাইটশেড পার্টনার্স-এর দুই বিশ্লেষক, ওয়াল্টার পিয়েসিক এবং জো গ্যালোন, অ্যাপল-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুকের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
তাঁদের মতে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌড়ে পিছিয়ে পড়া অ্যাপল-কে এগিয়ে নিতে একজন নতুন নেতার প্রয়োজন।
তাদের এই মন্তব্যের কারণ হলো, স্মার্টফোন বাজারে চাহিদা কমার পাশাপাশি, এআই প্রযুক্তিতে অ্যাপলের প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়া।
বিশ্লেষকদের মতে, টিম কুক সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হলেও, প্রযুক্তিগত দিক থেকে ভবিষ্যৎView AI প্রযুক্তিকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্যতার অভাব রয়েছে।
অ্যাপলের ইতিহাসে টিম কুকের অধীনে কোম্পানিটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
২০১২ সালে স্টিভ জবসের মৃত্যুর পর তিনি সিইও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং বর্তমানে অ্যাপলের বাজারমূল্য প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
অ্যাপল ওয়াচ, এয়ারপডস এবং বিভিন্ন ডিজিটাল সেবার মতো লাভজনক পণ্য তৈরি করে তিনি কোম্পানির আয় আরও বাড়িয়েছেন।
তবে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ক্ষেত্রে অ্যাপলের দুর্বলতা চোখে পড়ছে।
উদাহরণস্বরূপ, উন্নত প্রযুক্তির অভাবের কারণে বাজারে এখনো তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি অ্যাপলের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট, ভিশন প্রো।
এছাড়াও, উন্নতমানের এআই প্রযুক্তি তৈরিতেও তারা অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী, যেমন গুগল এবং ওপেনএআই-এর থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপলের এখন প্রয়োজন এমন একজন সিইও যিনি পণ্য উদ্ভাবনে বিশেষভাবে মনোযোগী হবেন।
যদিও টিম কুকের নেতৃত্বে অ্যাপল একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে, কিন্তু প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে টিকে থাকতে হলে নতুন নেতৃত্বের বিকল্প বিবেচনা করা যেতে পারে।
তবে, টিম কুককে সরানো সহজ হবে না।
কারণ, তিনি অ্যাপলের পরিচালনা পর্ষদের সমর্থন লাভ করেছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে কোম্পানির শেয়ারের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিম কুকের এই পদে টিকে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
অ্যাপলের জন্য ২০২৩ সালটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।
বিভিন্ন কর নীতি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন বিধিনিষেধের কারণে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া, স্মার্টফোন বাজারে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে একটি ফেডারেল আদালতে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
অ্যাপল এখনো তাদের পুরনো সাফল্যের ধারা ধরে রেখেছে, কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে হলে তাদের এআই প্রযুক্তিতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
এখন দেখার বিষয়, অ্যাপল এই পরিবর্তনের সঙ্গে কীভাবে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন