অ্যাপলের জন্য স্বস্তির খবর! শুল্কমুক্তিতে কি বাঁচবে আইফোন?

অ্যাপলের জন্য শুল্ক যুদ্ধ: উদ্বেগের কারণ কি শুধুই বাণিজ্যনীতি?

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির জটিল আবর্তে সম্প্রতি কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলের। ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে স্মার্টফোনকে।

তাই আসন্ন আইফোন উন্মোচন এবং বড়দিনের বাজারের আগে এটি অ্যাপলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জয়। তবে, বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপলের জন্য উদ্বেগের কারণ সম্ভবত শুল্কের চেয়েও অনেক বেশি।

তাদের প্রধান চিন্তা এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence – AI) এবং ভবিষ্যতের পণ্য কৌশল নিয়ে।

মার্কিন বাণিজ্যনীতির কারণে অ্যাপলকে কিছু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে, এমনটা জানা গেছে। যদিও স্মার্টফোন শুল্কমুক্ত, তবুও ভারতের ওপর শুল্ক আরোপের কারণে চলতি বছরে কোম্পানিটির ১.১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে, অ্যাপলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, তাদের ভবিষ্যৎ পণ্য কৌশল এবং এআই প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়া। এই দুটি বিষয় তাদের জন্য এখন উদ্বেগের কারণ।

বর্তমানে অ্যাপলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য হলো আইফোন, যা তাদের আয়ের সিংহভাগ সরবরাহ করে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিক্রিত আইফোনের একটি বড় অংশ ভারত থেকে আসে, শুল্কের এই চাপ তাদের ব্যবসা কিছুটা প্রভাবিত করবে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, শুল্ক একটি সমস্যা হলেও, অ্যাপলের শক্তিশালী সরবরাহ ব্যবস্থা এবং অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপনার কারণে তারা এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, কোভিড-১৯ এর সময় চীন নির্ভরতা কমাতে অ্যাপল তাদের সরবরাহ শৃঙ্খল ভারত ও ভিয়েতনামের মতো অঞ্চলে সরিয়েছিল।

অন্যদিকে, অ্যাপলের জন্য এআই প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়া একটি বড় উদ্বেগের কারণ। গুগলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাদের ডিজিটাল সহকারী উন্নত করার জন্য কাজ করছে, যেখানে অ্যাপল এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি।

এমনকি, অ্যাপলের সিরি (Siri) আপগ্রেডও বিলম্বিত হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এআইয়ের দৌড়ে পিছিয়ে থাকলে স্যামসাং, গুগল এবং কোয়ালকমের মতো প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে টিকে থাকা অ্যাপলের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

তবে, অ্যাপল জানিয়েছে, তারা এআইয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে তাদের বিভিন্ন ডিভাইসে এই প্রযুক্তি যুক্ত করার চেষ্টা করছে এবং এই খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগও করছে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আইফোন তৈরির জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল।

বিভিন্ন সময়ে শুল্ক নীতিতে পরিবর্তন আসায় ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অ্যাপলের জন্য শুল্ক একটি চ্যালেঞ্জ, তবে এটি তাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় নয়।

তাদের প্রধান ফোকাস হওয়া উচিত এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন পণ্য তৈরি করা।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *