যুক্তরাজ্যের আদালতে অ্যাপলের সঙ্গে দেশটির সরকারের গোপন লড়াই চলছে। ব্যবহারকারীর তথ্যের সুরক্ষায় এনক্রিপশন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের ক্লাউড ডেটার গোপন প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে ব্রিটিশ সরকার। সোমবার একটি আদালত এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ব্রিটিশ সরকার চাইছে, অ্যাপল যেন তাদের ‘আইক্লাউড’ ব্যবহারকারীদের ডেটা অ্যাক্সেস করার সুযোগ দেয়। তবে অ্যাপল কর্তৃপক্ষের দাবি, এতে ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। তাই সরকারের এই নির্দেশনার বিরুদ্ধে তারা আইনি লড়াইয়ে নেমেছে।
জানা গেছে, এই মামলার শুনানির গোপনীয়তা চেয়েছিল ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে তদন্ত বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল। আদালত জানিয়েছে, মামলার সামান্য কিছু তথ্য প্রকাশ করা যেতে পারে। এই মামলার অস্তিত্ব এবং এর সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলোর পরিচয় প্রকাশ করলে জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এমনটা তারা মনে করে না।
ফেব্রুয়ারিতে শোনা গিয়েছিল, ব্রিটিশ সরকারের এমন নির্দেশনার পর যুক্তরাজ্যের ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের এনক্রিপশন সুবিধা বন্ধ করে দিতে পারে অ্যাপল। তবে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে অ্যাপল বা ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাজ্যের এই ঘটনার দিকে নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। কারণ, এটি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে এবং এর ফলে বিদেশি কোনো সরকার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিকে চাপ দিতে পারে।
২০১৬ সালের ‘ইনভেস্টিগেটিভ পাওয়ারস অ্যাক্ট’ নামে পরিচিত একটি আইনের অধীনে, ব্রিটিশ সরকার অ্যাপলকে ব্যবহারকারীদের ডেটা অ্যাক্সেস করার জন্য একটি ‘টেকনিক্যাল ক্যাপাবিলিটি নোটিশ’ জারি করেছে। এই আইনের মাধ্যমে সরকার নজরদারির ক্ষমতা পায়, যা ‘স্নুপারস চার্টার’ নামেও পরিচিত।
অ্যাপলের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তারা জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে তারা। মূলত, ব্যবহারকারীদের তথ্য ক্লাউডে জমা রাখার সময়, এই এনক্রিপশন ব্যবস্থা তাদের ফাইল, ছবি, নোট এবং অন্যান্য ডেটাকে সুরক্ষিত রাখে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস