আরিয়্যাল উইন্টার: শৈশব ট্রমা থেকে উত্তরণ, নতুন জীবনের পথে
ছোটবেলা থেকেই ক্যামেরার সামনে পরিচিত মুখ, জনপ্রিয় মার্কিন টিভি সিরিয়াল ‘মডার্ন ফ্যামিলি’-র ‘অ্যালেক্স ডানফি’ চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পাওয়া অভিনেত্রী আরিয়েল উইন্টার এখন ২৭ বছর বয়সী। অভিনয় জীবন শুরু করার পর থেকেই খ্যাতির আলোয় আসা এই তারকার জীবন সবসময় মসৃণ ছিল না।
কেরিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও নানা চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে তাকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের কঠিন সময়গুলো নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।
লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম ও বেড়ে ওঠা আরিয়েলের অভিনয় জীবন শুরু হয় খুবই অল্প বয়সে। মাত্র চার বছর বয়সেই তিনি বিভিন্ন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে কাজ করা শুরু করেন। এরপর ‘মডার্ন ফ্যামিলি’-র মতো জনপ্রিয় একটি টিভি শো-তে কাজ করার সুযোগ আসে তার কাছে।
অল্প সময়েই তিনি দর্শকদের মন জয় করে নেন। কিন্তু খ্যাতির পাশাপাশি আরিয়েলকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মিডিয়া এবং সামাজিক মাধ্যমে বডি শেমিংয়ের শিকার হতে হয় তাকে।
শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে অনলাইনে কটাক্ষ করা হতো, যা তার আত্মবিশ্বাসে চরম আঘাত হানে।
নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন আরিয়েল। মায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। ১৪ বছর বয়সে, আদালতের নির্দেশে তাকে তার দিদির অভিভাবকত্বে পাঠানো হয়।
দিদির কাছে থাকার কারণে জীবনের কঠিন দিনগুলো কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন তিনি। এরপর আইনিভাবে সাবালক হওয়ার পর মা থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে নেন আরিয়েল।
ছোটবেলার সেই কঠিন দিনগুলো আরিয়েলের জীবনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চান না তিনি। তবে, বর্তমানে তিনি থেরাপির মাধ্যমে ধীরে ধীরে সেই ট্রমা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন।
অভিনয় থেকে দূরে না গিয়ে, আরিয়েল এখন নতুন জীবন শুরু করেছেন। ২০২০ সালে ‘মডার্ন ফ্যামিলি’র শুটিং শেষ হওয়ার পর তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস ছেড়ে চলে যান।
বর্তমানে তিনি তার প্রেমিক, অভিনেতা লুক বেনওয়ার্ডের সঙ্গে শান্ত ও নি শব্দ জীবনযাপন করছেন। রান্নাবান্না এবং ছয়টি পোষ্য কুকুর নিয়ে তার দিন কাটে।
অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আরিয়েল এখন প্রযোজনা, পডকাস্ট তৈরি এবং একটি কুকিং শো নিয়ে কাজ করছেন।
এছাড়াও, তিনি অনলাইনে শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করা একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। যাদের কাজ হলো ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চাওয়া অপরাধীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের আইনের আওতায় আনা।
নিজের অতীতের কঠিন অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আরিয়েল এখন অন্যদের সাহায্য করতে চান। তিনি চান, তার জীবন অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হোক।
তিনি চান, মানুষ জানুক, প্রতিকূলতা জয় করে কিভাবে নতুন করে বাঁচা যায়।
তথ্যসূত্র: পিপল