আতঙ্কে মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে যা ঘটল! বাবার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায়, মেয়ের কথিত যৌন নির্যাতনের শিকারকারীর জীবনাবসানের অভিযোগে এক বাবাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অ্যারন স্পেন্সার।

তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যা মামলা। অন্যদিকে, অ্যারনের স্ত্রী জানিয়েছেন, তার স্বামী আসলে তাদের সন্তানকে রক্ষা করেছেন।

এই ঘটনায় একদিকে যেমন নিন্দুকের সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তেমনই অনেকে স্পেন্সারের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বছরের অক্টোবরে। ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে খুঁজে না পাওয়ার পর, স্পেন্সার জানতে পারেন যে, তার মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে।

এরপর তিনি দ্রুত মেয়েকে খুঁজতে বের হন। পরে তিনি জানতে পারেন, তার মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ছিল ৬৭ বছর বয়সী মাইকেল ফোসলারের বিরুদ্ধে।

ফোসলার জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই এই ঘটনা ঘটে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, স্পেন্সার তার মেয়েকে ফোসলারের গাড়িতে দেখতে পান। এরপর তিনি ফোসলারের গাড়িটিকে ধাওয়া করেন এবং এক পর্যায়ে ধাক্কা দেন।

এর ফলশ্রুতিতে ফোসলার নিহত হন।

এই ঘটনার পর, প্রসিকিউটররা স্পেন্সারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনেন।

এই ধরনের হত্যার ক্ষেত্রে, অপরাধীর সর্বোচ্চ কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে, যদি হত্যাকাণ্ডে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

যদিও স্পেন্সার ফোসলারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন, তারপরও বিচারের ফলাফল নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

এই ঘটনার জেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

অনেকেই স্পেন্সারকে তাদের মেয়ের জীবন বাঁচানোর জন্য বীর হিসেবে অভিহিত করছেন। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে অনলাইনে কয়েক লক্ষ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে।

এমনকি একটি বন্দুক অধিকার গোষ্ঠী স্পেন্সারের পদক্ষেপকে সমর্থন করে তার আইনি লড়াইয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহেরও ব্যবস্থা করেছে।

মামলার শুনানির সময়, মূল প্রশ্ন হবে – বিচারকরা স্পেন্সারের আত্মরক্ষার যুক্তিকে সমর্থন করেন কিনা।

আইনজ্ঞদের মতে, জুরিদের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে, তারা অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত নাও করতে পারে, যদিও তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ থাকে।

আদালতের নথি অনুযায়ী জানা যায়, ফোসলারের বিরুদ্ধে ইন্টারনেটে শিশুদের প্রতি হয়রানি, যৌন নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি রাখার মতো ৪৩টি অভিযোগ ছিল।

ঘটনার শিকার মেয়েটির মা জানিয়েছেন, ফোসলারের জামিনের সময় কোনো প্রকার নজরদারির ব্যবস্থা ছিল না।

অন্যদিকে, স্পেন্সারের পরিবার জানায়, তাদের মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফোসলারের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল।

মেয়েটি যখন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যেত, তখন ফোসলার তাকে কুপ্রস্তাব দিত।

এই ঘটনার পর, পরিবারটি তাদের মেয়ের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসা শুরু করে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়।

তারা বিচারের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা।

আগামী ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এই মামলার বিচারকার্য শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এখন সবার দৃষ্টি আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *