আর্কানসাসের স্কুলে দশ আজ্ঞা: অভিভাবকদের প্রতিবাদ, মামলা!

যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস রাজ্যে, বিদ্যালয়গুলোতে ‘দশ আজ্ঞা’ প্রদর্শনের বাধ্যতামূলক নির্দেশনার বিরুদ্ধে সেখানকার কয়েকটি পরিবারের করা একটি মামলার খবর পাওয়া গেছে। এই মামলার মাধ্যমে ঐ রাজ্যের নতুন একটি আইনের বিরোধিতা করা হচ্ছে, যেখানে সরকারি বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণীকক্ষ ও পাঠাগারে ‘দশ আজ্ঞা’ প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

পরিবারগুলোর দাবি, এই আইন তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে।

খবর অনুযায়ী, আরকানসাসের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স এই আইনটি অনুমোদন করেছেন। আইনটি কার্যকর হলে রাজ্যের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘দশ আজ্ঞা’র লিখিত রূপ প্রদর্শন করা আবশ্যক হবে।

মামলা দায়েরকারী পরিবারগুলোর মধ্যে রয়েছে ইহুদি, ইউনিটেরিয়ান ইউনিভার্সালিস্ট এবং কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নয় এমন কিছু মানুষ। তাদের মতে, এই আইন শিশুদের উপর তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের চাপ সৃষ্টি করবে।

মামলাটি দায়ের করা হয়েছে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ), আমেরিকানস ইউনাইটেড ফর সেপারেশন অফ চার্চ অ্যান্ড স্টেট এবং ফ্রিডম ফ্রম রিলিজিয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। মামলায় আরকানসাসের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের চারটি স্কুল জেলার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ফায়েটভিল, বেনটনভিল, শিলোম স্প্রিংস এবং স্প্রিংডেল।

মামলার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা ফেয়েটভিলে অবস্থিত ফেডারেল আদালতে একটি প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করবেন, যাতে আইনের প্রয়োগ স্থগিত করা যায়। তাদের যুক্তি হলো, এই আইন সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায় এবং পরিবারগুলোর প্রথম সংশোধনীতে দেওয়া অধিকার লঙ্ঘন করে।

আবেদনকারীদের একজন, সামান্থা স্টিনসন জানিয়েছেন, “এই আইনের মাধ্যমে আমাদের সন্তানদের প্রতিদিন বিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ‘দশ আজ্ঞা’র খ্রিষ্টান-কেন্দ্রিক অনুবাদ মেনে চলতে বাধ্য করা হবে, যা অভিভাবক হিসেবে আমাদের অধিকার খর্ব করবে এবং শিশুদের জন্য একটি ধর্মীয়ভাবে চাপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করবে।”

এই ধরনের একটি আইন এর আগে লুইজিয়ানাতেও প্রণয়ন করা হয়েছিল, তবে আদালত তা কার্যকর করার আগেই স্থগিত করে দেয়। টেক্সাসের গভর্নরও অনুরূপ একটি বিলে স্বাক্ষর করার কথা জানিয়েছেন।

আদালতের শুনানির ফলাফলের উপর নির্ভর করছে এই মামলার ভবিষ্যৎ। এই মামলার রায় শুধু আরকানসাসের নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজ্যেও অনুরূপ আইনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *