ঘরের ভেতর বন্দী, মৃতদেহ লুকিয়ে অর্থ! চাঞ্চল্যকর: সেনা ভেটেরানের সাথে যা ঘটল!

যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিতে এক মর্মান্তিক ঘটনায়, ৪৪ বছর বয়সী ব্রায়ান ডিচ নামে এক ব্যক্তিকে তাঁর পঙ্গু, সেনা-veteran (সাবেক সেনা সদস্য) চাচার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার, প্রতারণা এবং তাঁর মৃত্যুরহস্য গোপনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, ডিচ তাঁর চাচার সরকারি সুযোগ-সুবিধা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই ঘৃণ্য কাজটি করেছেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, ব্রায়ান ডিচ ২০০৮ সাল থেকে তাঁর চাচার দেখাশোনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এই প্রতারণা শুরু করেন। তিনি তাঁর চাচা, টমাস ক্লাবকে একটি গ্যারেজে বন্দী করে রেখেছিলেন এবং তাঁর দেখাশোনার কোনো ব্যবস্থা করেননি।

টমাস ক্লাব ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আহত একজন সেনা সদস্য এবং কোয়াড্রিপ্লেজিয়ায় (quadriplegia) আক্রান্ত ছিলেন, যার কারণে তিনি হাত-পা নাড়াতে পারতেন না। ডিচ তাঁর চাচার শারীরিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে চরম অবহেলা করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ডিচ তাঁর চাচার মৃত্যুর পর আত্মীয়-স্বজনদের জানান, তিনি বৃদ্ধাশ্রমে আছেন। এরপর তিনি চাচার মৃতদেহ গ্যারেজেই লুকিয়ে রাখেন এবং নিয়মিতভাবে তাঁর নামে আসা সরকারি ভাতা আত্মসাৎ করতে থাকেন।

২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত, ডিচ কমপক্ষে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ৭ কোটি টাকার বেশি) আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অর্থের বিনিময়ে তিনি বিলাসিতা করেছেন এবং বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ কিনেছেন।

পরে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে, কর্তৃপক্ষের হাতে চাচার অর্ধগলিত, বরফ জমাট বাঁধা মৃতদেহ একটি ময়লার বালতিতে পাওয়া যায়। তাঁর কাছে তিনটি বন্দুকও পাওয়া যায়, যা একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামীর কাছে থাকা বেআইনি।

তদন্তে জানা গেছে, ডিচ এর আগেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যার মধ্যে চুরি এবং পারিবারিক সহিংসতার মতো ঘটনাও রয়েছে। ডিচের চাচা টমাস ক্লাব ছিলেন ডিমেনশিয়া (dementia) রোগী এবং শারীরিক অক্ষমতার কারণে নিজের মলমূত্র ত্যাগ করতেও অক্ষম ছিলেন।

ভুক্তভোগীর এক আত্মীয় জানিয়েছেন, জার্মানির এক গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর টমাস ক্লাব প্যারালাইজড হয়ে যান। ডিচের এই জঘন্য কাজের কারণে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বর্তমানে, ব্রায়ান ডিচের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তার-সংক্রান্ত জালিয়াতি, পরিচয় চুরি, সরকারি সম্পত্তি চুরি এবং আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার। সেন্ট লুইসের একটি আদালতে হাজির হয়ে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

মামলাটির তদন্ত করছে স্থানীয় পুলিশ বিভাগ, ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিদর্শক দপ্তর, সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসন এবং অ্যালকোহল, তামাক, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যুরো।

সরকারী কৌঁসুলি ডেরেক ওয়াইজম্যান এই ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং ঘৃণ্য অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “এটি একজন পরিবারের সদস্য, একজন সেনা সদস্যের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও নিষ্ঠুরতার উদাহরণ।

তথ্যসূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *