বিখ্যাত শিল্পী যুগল: খ্যাতি আর ভালোবাসার টানাপোড়েন। শিল্পীদের ব্যক্তিগত জীবন বরাবরই মানুষের আগ্রহের বিষয়।
তাদের প্রেম ও দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা যেন আরও বেশি। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন বই, প্রদর্শনী, এবং অনলাইন নিবন্ধে এই বিষয়টির প্রতিফলন দেখা যায়।
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত একটি তথ্যচিত্র তেমনই এক শিল্পী দম্পতির গল্প নিয়ে এসেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী জোয়েল মায়ারোভিজ এবং তার স্ত্রী, ইংরেজ শিল্পী ও স্ব-প্রকাশিত লেখিকা ম্যাগি ব্যারেটের জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে “টু স্ট্রেঞ্জার্স ট্রাইং নট টু কিল ইচ আদার” (Two Strangers Trying Not To Kill Each Other) নামের এই তথ্যচিত্র।
চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন জ্যাকব পার্লমাটার এবং ম্যানন ওয়েইমেট নামের দুই শিল্পী। ইতালির টাস্কানি, নিউ ইয়র্ক এবং কর্নওয়ালে বসবাস করা এই দম্পতির জীবনের নানা দিক এতে তুলে ধরা হয়েছে।
এই চলচ্চিত্রে মূলত শিল্পী দম্পতিদের সম্পর্কের গভীরতা, খ্যাতির প্রভাব এবং ভালোবাসার টানাপোড়েন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ফ্রাইডা কাহলো এবং দিয়েগো রিভেরা, কিংবা মারিনা আব্রামোভিচ ও উলায়-এর মতো বিখ্যাত শিল্পী যুগলের সম্পর্কের উত্থান-পতনগুলোও যেন এই আলোচনার অংশ।
জোয়েল মায়ারোভিজের কাজের প্রতি মুগ্ধতা ছিল জ্যাকব পার্লমাটারের। তিনি বলেন, “তাদের মধ্যে এক ধরনের আকর্ষণ ছিল, যা মানুষকে কাছে টানত।”
তথ্যচিত্রে ম্যাগি ব্যারেটের শিল্পী জীবন এবং খ্যাতি নিয়ে তার উপলব্ধির কথাও উঠে এসেছে। ব্যারেট স্বীকার করেন, বিখ্যাত স্বামীর স্ত্রী হওয়ায় তার নিজের শিল্পী জীবনের বিকাশে কিছু সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়েছিল।
চলচ্চিত্রটিতে জীবনের নানা দিক, বিশেষ করে মৃত্যু নিয়ে তাদের ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। তারা আলোচনা করেছেন, মৃত্যুর পর কার জন্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে শোক সংবাদ প্রকাশিত হবে, কিংবা তাদের চিতাভস্ম কোন দেশে রাখা হবে।
এই চলচ্চিত্রে ভালোবাসার গভীরতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং শিল্পকর্মের প্রতি তাদের আবেগ বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।
ক্যামেরার সামনে তারা তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলোও তুলে ধরেছেন, যা দর্শকদের জন্য অন্যরকম অভিজ্ঞতা যোগ করেছে।
এই চলচ্চিত্রে মায়ারোভিজ এবং ব্যারেটের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পেশাগত ক্ষেত্রে তাদের মধ্যেকার অসামঞ্জস্য।
ব্যারেট তার এক বন্ধুর সঙ্গে আলাপকালে স্বীকার করেছেন, একজন বিখ্যাত মানুষের স্ত্রী হওয়ার কারণে তার নিজের শিল্পী জীবন কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই অসামঞ্জস্য শুধু শিল্পী দম্পতিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের সর্বত্রই দেখা যায়।
তবে খ্যাতিমান শিল্পী যুগলের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রকট হয়ে ওঠে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন