বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী নাওমি জুডের মৃত্যুর কয়েক মাস পর, তাঁর মেয়ে, অভিনেত্রী অ্যাশলে জুড তাঁর মায়ের জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো নিয়ে মুখ খুলেছেন। একটি নতুন তথ্যচিত্রে অ্যাশলে তাঁর মায়ের সঙ্গে কাটানো শেষ কথোপকথন এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁর লড়াইয়ের কথা বর্ণনা করেছেন, যা অনেকের কাছেই বেদনার এক প্রতিচ্ছবি।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে টেনেসির নিজ বাসভবনে ৭৬ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন নাওমি জুড। অ্যাশলে জানিয়েছেন, মৃত্যুর দিন সকালে তিনি মায়ের কাছ থেকে “সাহায্য করুন” (“pls help”) লিখে একটি বার্তা পেয়েছিলেন। মায়ের বাড়িতে পৌঁছে তিনি দেখেন, নাওমি শারীরিক অস্বস্তি অনুভব করছেন এবং কিছুতেই যেন স্থির থাকতে পারছিলেন না।
তিনি অ্যাশলের কাছে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা প্রকাশ করেন। অ্যাশলে জানান, তাঁর মা একসময় শান্ত হয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং কেন তিনি এত কষ্টের পরেও বেঁচে ছিলেন, সেই বিষয়ে আলোচনা করেন।
অ্যাশলে মাকে জানান যে, তাঁর (অ্যাশলের) কোনো চিন্তা করতে হবে না, তিনি ভালো আছেন। মায়ের মানসিক শান্তির জন্য অ্যাশলে তাঁকে আশ্বস্ত করেন। এরপর নাওমি জুড উপরে যান।
অ্যাশলে কিছুক্ষণ পর তাঁর মায়ের ঘরে যান এবং সেখানে তিনি মাকে মৃত অবস্থায় খুঁজে পান। অ্যাশলে জুড জানান, তিনি তাঁর মায়ের পাশে বসে তাঁকে জড়িয়ে ধরেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
তিনি মাকে বলেছিলেন, “সব ঠিক আছে, মা। আমি জানি আপনি কতটা কষ্ট পাচ্ছিলেন।” অ্যাশলে তাঁর মায়ের প্রতি গভীর ভালোবাসার কথা জানান এবং তাঁকে মুক্তি দিতে বলেন।
অ্যাশলে-র সবচেয়ে বড়ো আকাঙ্ক্ষা ছিল, মা যেন তাঁর সমস্ত গ্লানি ও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পান। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত একটি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয় যে, নাওমি জুড আত্মহত্যার মাধ্যমেই জীবন শেষ করেছেন।
তাঁর পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, নাওমি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন, তিনি PTSD (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার) এবং বাইপোলার ডিসঅর্ডারের শিকার ছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, “আমরা সবসময় আমাদের আনন্দের মুহূর্তগুলো যেমন ভাগ করে নিয়েছি, তেমনই দুঃখগুলোও ভাগ করে নিয়েছি। আমাদের পরিবারের প্রধান, যিনি এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করেছেন।”
মানসিক স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি অথবা আপনার পরিচিত কেউ যদি আত্মহত্যার কথা ভাবেন, তাহলে দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
বাংলাদেশেও এখন মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে আপনি সাহায্য চাইতে পারেন। প্রয়োজনে, স্থানীয় হেল্পলাইন অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তথ্য সূত্র: পিপলস