এশীয় শেয়ার বাজারে সোমবার ছিল উত্থান, যার নেতৃত্বে ছিল প্রযুক্তি খাতের শেয়ারগুলো। একই চিত্র দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও, যেখানে টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে শেয়ারের দাম বাড়ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল। প্রযুক্তি খাতের শেয়ারের শক্তিশালী চাহিদার কারণে দেশটির প্রধান শেয়ার সূচক, কোস্পি, এদিন ২.৮ শতাংশ বেড়ে ৪,২২১.৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা নতুন রেকর্ড। বিশেষ করে, চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানি এসকে হাইনিক্স-এর শেয়ারের দাম ১১ শতাংশ বেড়েছে। জানা গেছে, তারা দেশটির আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (artificial intelligence) অবকাঠামো এবং সক্ষমতা বাড়াতে এনভিডিয়া-র সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা করছে।
দেশটির বৃহত্তম কোম্পানি স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স-এর শেয়ারও এদিন ৩.৪ শতাংশ বেড়েছে।
চীনের শেয়ার বাজার কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১.১ শতাংশ বেড়ে ২৬,১৮৩.৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে, প্রযুক্তি খাতের উত্থানের বিপরীতে, স্বর্ণের দোকানগুলির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। চীনা সরকার স্বর্ণ বিক্রয়ের ওপর করের রিবেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, চাউ তাই ফুড জুয়েলারি গ্রুপের শেয়ারের দাম ৮.৭ শতাংশ কমেছে।
উল্লেখ্য, এই রিবেট কমানোর ফলে স্বর্ণের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
এদিকে, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল সম্মেলন শুরু হওয়ার পরেই এই দাম বাড়ে। ওপেক প্লাস (OPEC+) জোট ২০২৩ সালের প্রথম দিকে তেলের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
এর ফলে, মার্কিন বেঞ্চমার্ক অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬১.৪১ ডলারে (প্রায় ৬,৭০০ টাকা) পৌঁছেছে, যা আগের দিনের তুলনায় ৪৩ সেন্ট বেশি। আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড-এর দামও ব্যারেল প্রতি ৬৫.২৩ ডলারে (প্রায় ৭,১৫০ টাকা) উঠেছে, যা আগের দিনের তুলনায় ৪৬ সেন্ট বেশি।
চীন এবং তাইওয়ানের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা চলছে। যদিও তাইওয়ানের স্ব-শাসিত অঞ্চলের বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কোনো পদক্ষেপ নেবেন না বলে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, তবে এর সরাসরি প্রভাব বাজারের ওপর পড়েনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। শুক্রবার, অ্যামাজন-এর শেয়ারের দাম ৯.৬ শতাংশ বাড়ার কারণে বাজারের চিত্র আরও উজ্জ্বল হয়। এছাড়া, অ্যাপলের ভালো মুনাফার খবরও বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
শেয়ার বাজারের এই উত্থান-পতন এবং তেলের দাম বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। তেলের দাম বাড়লে পরিবহন খরচ বাড়বে, যা বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের এই উত্থান বাংলাদেশের প্রযুক্তি শিল্পের জন্য একটি ইতিবাচক দিক হতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস