আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা: ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে এশীয় শেয়ার বাজারে ধস।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর সোমবার এশিয়ার শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় এই পদক্ষেপের গুরুতর প্রভাব পড়েছে, যা নিয়ে এখন উদ্বেগে বিশ্ব অর্থনীতি।
সোমবার দিনের শুরুতে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। দিনের শেষে এটি ৬ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।
হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ৯.৪ শতাংশ এবং সাংহাই কম্পোজিট সূচক ৬.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচকও ৪.১ শতাংশ কমেছে।
একইসঙ্গে, ভারতীয় শেয়ার বাজারও উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির বেঞ্চমার্ক বিএসই সেনসেক্স এবং নিফটি ৫০ সূচক উভয়ই প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছিল, যা ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে একদিনের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরতে রাজি নন। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে না পারলে তিনি তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন।
ট্রাম্পের মতে, এই শুল্কগুলো ‘ওষুধের’ মতো, যা বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করবে।
এদিকে, চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘পিপলস ডেইলি’ এক প্রতিবেদনে জানায়, “আকাশ ভেঙে পড়বে না।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বিচার শুল্কের মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত এবং আমাদের হাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে।” চীনও যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা বুধবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
ডলারের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ান ডলারের দরও কমে গেছে, যা কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুর দিকের পর্যায়ে নেমে এসেছে।
অস্ট্রেলিয়ার ট্রেজারার জিম চালমার্স জানিয়েছেন, চীনের অর্থনীতির মন্দা এবং সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার কারণে এই দরপতন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তাদের মডেলিং অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এবং চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, তবে তা তুলনামূলকভাবে কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আগামী দিনগুলোতে বাজারে আরও অস্থিরতা দেখা যেতে পারে। এই পরিস্থিতির দ্রুত কোনো সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা কম।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস