শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রভাব, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তা!

আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতার মধ্যে বেশিরভাগ এশীয় শেয়ার সূচকের ঊর্ধ্বগতি, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মন্দাভাব।

ঢাকা, [তারিখ]। শুক্রবারের ছুটির দিনে, অস্থির একটি বাজারের মধ্যে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলো মিশ্র প্রবণতা দেখিয়েছে। কিছু সূচকের সামান্য উন্নতি হলেও, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ এখনো কাটেনি।

এর মূল কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ইউনাইটেড হেলথের শেয়ারের দরপতন এবং চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের অনিশ্চয়তা।

জাপানের টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে, নিক্কেই ২২৫ সূচক ১ শতাংশ বেড়ে ৩৪,৭৩০.২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচকও ০.৫ শতাংশ বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর।

তাইওয়ানের তাইএক্স সূচক ০.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি)-এর মুনাফা প্রত্যাশা মতোই ছিল।

তবে, বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে তারা সতর্কবার্তা দিয়েছে। টিএসএমসি-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের গ্রাহকদের আচরণে এখনো কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি, তবে শুল্ক নীতির সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

অন্যদিকে, চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক সামান্য ০.১ শতাংশ কমেছে। ব্যাংককের শেয়ারবাজারেও উত্থান লক্ষ্য করা গেছে, সেখানকার সূচক ০.৬ শতাংশ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে, ইউনাইটেড হেলথ গ্রুপের শেয়ারের দর ২২.৪ শতাংশ কমেছে। কোম্পানিটি তাদের আর্থিক ফলাফলের পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে।

এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, তাদের মেডিকেয়ার সুবিধাভোগীরা অপ্রত্যাশিতভাবে বেশি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করছেন। এই ঘটনার ফলে, ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ৫২৭ পয়েন্ট কমেছে।

অপরদিকে, তেলের দাম কিছুটা পুনরুদ্ধার হওয়ায় তেল ও গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারে তেজিভাব দেখা গেছে। ডায়মন্ডব্যাক এনার্জি ৫.৭ শতাংশ এবং হ্যালিবার্টন ৫.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ এখনো একটি বড় উদ্বেগের কারণ। অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হলে তা মন্দা ডেকে আনতে পারে।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দিলেও, ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করেছেন। পাওয়েল সতর্ক করে বলেছিলেন, শুল্ক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি এবং এর ফলে অর্থনীতি দুর্বল হতে পারে ও মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের সুবিধার জন্য আবেদন করা শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে, যা বাজারের জন্য ইতিবাচক। তবে, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে অপ্রত্যাশিত সংকোচনের খবরও পাওয়া গেছে।

ইউরোপীয় বাজারেও মন্দাভাব দেখা গেছে। ফ্রান্স ও জার্মানির শেয়ার সূচক যথাক্রমে ০.৬ শতাংশ ও ০.৫ শতাংশ কমেছে।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমালেও, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তেমন কোনো উৎসাহ দেখা যায়নি।

ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের বিনিময় হার কমেছে। ইউরোর বিনিময় হার সামান্য বেড়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজারের গতিবিধি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবর্তনগুলো দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *