শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বগতি, যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার হ্রাসের প্রত্যাশা।
ঢাকা, শুক্রবার – বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বগতির ঢেউ লেগেছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারেও দেখা যাচ্ছে তেজি ভাব।
বিনিয়োগকারীরা এখন তাকিয়ে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তের দিকে, যা বাজারের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।
জাপানের বাজার আজ ছিল বেশ উজ্জ্বল। শুক্রবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে জাপানের শ্রমিকদের নগদ আয় আগের বছরের তুলনায় ৪.১ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে জুনে এই হার ছিল ৩.১ শতাংশ।
এছাড়াও, একই মাসে পরিবারের ব্যয় ১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা টানা তিন মাস ধরে বাড়ছে। এই ধরনের ইতিবাচক অর্থনৈতিক সূচকগুলো ইঙ্গিত দেয় যে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (Bank of Japan) আগামী অক্টোবরে সুদের হার বাড়াতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, মজুরি বৃদ্ধি এবং ব্যয়ের এই ধারাবাহিকতা জাপানে স্থিতিশীল মূল্যস্ফীতি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত কিছু অর্থনৈতিক তথ্য কিছুটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কর্মসংস্থান বিষয়ক একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগস্ট মাসে নিয়োগের হার কমেছে।
যদিও এই মুহূর্তে এটিকে মন্দার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে না, তবে এর ফলে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর কথা ভাবতে পারে, যা বাজারের জন্য ভালো খবর হতে পারে। কারণ সুদের হার কমালে তা অর্থনীতিকে চাঙা করতে এবং কর্মসংস্থান বাড়াতে সহায়তা করে।
তবে এর নেতিবাচক দিক হলো, এটি মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়াতে পারে।
অন্যদিকে, চীন, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার শেয়ার বাজারেও আজ উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১.৩ শতাংশ বেড়ে ২৫,৩৮২.৫৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আর সাংহাই কম্পোজিট সূচক ১.৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৮১৩.৩৫ পয়েন্টে।
এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,২০৫.১২ পয়েন্টে, এবং অস্ট্রেলিয়ার এসএন্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ০.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,৮৭১.২০ পয়েন্টে।
তাইওয়ানের তাইএক্স সূচক ১.৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে ভারতের শেয়ার বাজার, বিএসই সেনসেক্স, সামান্য ০.৩ শতাংশ কমেছে।
ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দর সামান্য কমেছে, যেখানে ইউরোর দাম বেড়েছে।
শুক্রবার অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৬৩.৩২ ডলারে (প্রায় ৬,৮০০ টাকা) এবং ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৬৬.৮৬ ডলারে (প্রায় ৭,২০০ টাকা) নেমে আসে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ইল্ডও কমেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি স্বস্তির কারণ।
বাজারের এই অস্থিরতা এবং সুদের হার কমার সম্ভাবনা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং শেয়ার বাজারের ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, সেদিকে এখন সকলের দৃষ্টি।
আন্তর্জাতিক বাজারের এই পরিবর্তনগুলো আমদানি-রপ্তানি এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস