শেয়ার বাজারের পতন: জেগে উঠল এশিয়ার বাজার, বাড়ছে উদ্বেগ!

শেয়ার বাজারে অস্থিরতা, এশিয়ার বাজারগুলোতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বুধবার এশিয়ার শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। এর কারণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েলের মন্তব্যকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পাওয়েল সম্প্রতি বলেছেন যে, শেয়ারের দাম “যথেষ্ট উচ্চমূল্যে” রয়েছে। ওয়াল স্ট্রিটে দরপতনের পরেই এমনটা ঘটল।

জাপানের প্রধান সূচক নিক্কেই ২২৫ সকালে কিছুটা ক্ষতির পর ০.৩% বেড়ে ৪৫,৬১২.৭৭-এ এসে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার এসএন্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ০.৯% কমে ৮,৭৬৪.৫০-এ নেমে এসেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক ০.৬% হ্রাস পেয়ে ৩,৪৬৬.৫০-এ দাঁড়িয়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১.১% বেড়ে ২৬,৪৪৮.৬৪-এ পৌঁছেছে। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ০.৮% বৃদ্ধি পেয়ে ৩,৮৫১.২৮-এ দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারেও কিছুটা দুর্বলতা দেখা গেছে। এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ০.৬% কমে ৬,৬৬৬.৯২-তে, ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ৮৮.৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬,২৯২.৭৮-এ, এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচক ২১৫.৫০ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে ২২,৫৭৩.৪৭-এ এসে দাঁড়িয়েছে।

ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, একদিকে যেমন কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, তেমনই মুদ্রাস্ফীতিও ২% লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়ে গেছে। গত সপ্তাহে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর পর এই প্রথম তিনি এমন মন্তব্য করলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, পাওয়েলের এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ঝুঁকিহীন পথ খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছর এবং আগামী বছর সুদের হার আরও কমানোর পরিকল্পনা করছে, তবে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় তারা সতর্ক রয়েছেন। শুক্রবার প্রকাশিতব্য তথ্যে জানা যাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিনিসপত্রের দাম কতটা বাড়ছে। অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছেন, গত মাসের তুলনায় এই বৃদ্ধি সামান্য বেশি হতে পারে।

ওয়াল স্ট্রিটে, প্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া (Nvidia) তাদের আগের দিনের বড় মুনাফা কিছুটা কমিয়ে নেওয়ায় বাজারে প্রভাব ফেলেছে। কোম্পানিটি ওপেনএআই (OpenAI)-এর সঙ্গে ডেটা সেন্টার তৈরির অংশীদারিত্ব ঘোষণা করার পরেই এমনটা ঘটল। এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম ২.৮% কমেছে। অ্যামাজন ৩% এবং মাইক্রোসফটের শেয়ার ১% কমেছে।

বন্ড মার্কেটে ট্রেজারি ফলন সামান্য কমেছে। ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারির ফলন সোমবারের ৪.১৫% থেকে কমে ৪.১১%-এ দাঁড়িয়েছে।

জ্বালানি তেলের বাজারে, বেঞ্চমার্ক ইউএস ক্রুড ব্যারেল প্রতি ১৩ সেন্ট বেড়ে ৬৩.৫৪ ডলারে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড ১০ সেন্ট বেড়ে ৬৭.৭৩ ডলারে লেনদেন হয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে, মার্কিন ডলার জাপানি ইয়েনের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে। ১ ডলারের বিনিময় হার ১৪৭.৫৬ ইয়েন থেকে বেড়ে ১৪৮.০১ ইয়েনে দাঁড়িয়েছে। ইউরোর বিনিময় হার ১.১৮১৮ ডলার থেকে কমে ১.১৭৯৮ ডলারে নেমে এসেছে।

এই বাজারের অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, বিশ্ববাজারে তেলের দামের পরিবর্তন এবং মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থান দেশের আমদানি ও রপ্তানি খাতে প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *