শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া: হতাশ বিনিয়োগকারীরা?

আজকের এশীয় শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অস্থিরতা কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার পরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তবে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সম্ভবত বছরের শেষ দিকে সুদের হার কমাতে পারে, যা মার্কিন অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে।

জাপানের অর্থনীতি নিয়ে খারাপ খবর এসেছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে জাপানের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত হারে সংকুচিত হয়েছে। রপ্তানি কমে যাওয়া এবং ভোক্তাদের ব্যয় অপরিবর্তিত থাকার কারণে এমনটা হয়েছে।

এর ফলস্বরূপ, টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক ০.৩ শতাংশ কমে ৩৭,659.3৯-এ দাঁড়িয়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১ শতাংশ কমে ২৩,২1৬.২০-এ এবং সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ০.৬ শতাংশ কমে ৩,৩৬০.৮২-তে নেমে এসেছে।

অন্যদিকে, চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা’র শেয়ারের দর ৫.২ শতাংশ কমেছে, কারণ তাদের আর্থিক ফলাফল বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস পূরণ করতে পারেনি। তবে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক প্রায় অপরিবর্তিত ছিল, এবং অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ০.৬ শতাংশ বেড়েছে।

তাইওয়ানের তাইএক্স সূচক ০.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শেয়ার বাজার মিশ্র প্রবণতা দেখিয়েছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৪ শতাংশ বেড়ে ৫,৯১৬.৯৩-এ দাঁড়িয়েছে, যা টানা চার দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকার প্রমাণ।

তবে, ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ০.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও, নাসডাক কম্পোজিট ০.২ শতাংশ কমেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন বাণিজ্য নীতির কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। গত মাসে মার্কিন খুচরা বিক্রেতাদের বিক্রি কমেছে, যদিও পাইকারি পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা স্থিতিশীল ছিল।

ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জুরোম পাওয়েল সতর্ক করেছেন যে বিশ্ব সম্ভবত সরবরাহ শৃঙ্খলে আরও ঘন ঘন ধাক্কা অনুভব করতে পারে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

ওয়ালমার্টের শেয়ারের দর সামান্য কমেছে, যদিও তারা ভালো মুনাফা করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে, যা ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্কের ফলস্বরূপ।

অন্যদিকে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিসকো সিস্টেমস-এর শেয়ারের দর বেড়েছে, কারণ বিশ্লেষকরা তাদের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) নিয়ে আশাবাদী।

তেলের বাজারেও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি সম্ভাব্য চুক্তির কারণে তেলের সরবরাহ বাড়তে পারে, এমন ধারণায় তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ কমেছে।

তবে, শুক্রবার সকালে তেলের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।

ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের দর কমেছে, যেখানে ইউরোর উত্থান হয়েছে।

এই বাজারের অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনগুলো আমাদের দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

বাণিজ্য শুল্ক এবং বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন সুযোগও সৃষ্টি করতে পারে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *