আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা: ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ছায়া, তেলের দামে পতন, এশিয়ার শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রভাব
ঢাকা, [আজকের তারিখ]। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে তেলের দামে কিছুটা পতন দেখা গেছে, অন্যদিকে এশিয়ার শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে যে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেবে কিনা।
শুক্রবার সকালে, মার্কিন তেলের বেঞ্চমার্ক ব্যারেল প্রতি প্রায় ৭৩.৬৪ ডলারে নেমে আসে, যেখানে আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড ছিল ৭৬.৫৬ ডলার। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত যদি দীর্ঘায়িত হয়, তবে বিশ্বব্যাপী তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইরান বিশ্বের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং হরমুজ প্রণালীর কাছাকাছি অবস্থিত, যে পথ দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশের তেলের বাণিজ্য হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তবে এখনো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খোলা রয়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি চলমান থাকায় বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি নিতে দ্বিধা বোধ করছেন।
জাপানের বাজারেও অস্থিরতা দেখা গেছে। মে মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৩.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা দেশটির সরকারের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির কারণে জাপানের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এশিয়ার অন্যান্য শেয়ার বাজারের মধ্যে হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও সাংহাই কম্পোজিট সূচক সামান্য ০.১ শতাংশ কমেছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে। অস্ট্রেলিয়ার এস&পি/এএসএক্স ২০০ সূচক ০.২ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ১.৫ শতাংশ কমেছে।
বৃহস্পতিবার, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড তাদের প্রধান সুদের হার ২ বছরের সর্বনিম্ন ৪.২৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে। ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের বিনিময় হার ১৪৫.৩৭-এ নেমে এসেছে, যেখানে ইউরোর মূল্য ১.১৫২ ডলারে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। তেলের দাম বাড়লে পরিবহন খরচ বাড়বে, যা সরাসরিভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামের উপর প্রভাব ফেলবে। ফলে, দেশের বাজারেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস