রেকর্ড: ওয়াল স্ট্রিটের সাফল্যে এশিয়ার বাজারেও কি হাসি?

শেয়ার বাজারে ঊর্ধ্বগতি, ওয়াল স্ট্রিটের সাফল্যের ঢেউয়ে এশীয় বাজারও চাঙ্গা।

আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ার বাজার নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর পরে, শুক্রবার এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলোতেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। উন্নত অর্থনৈতিক তথ্য এবং কিছু বড় কোম্পানির লাভজনকতার খবর এই উত্থানের মূল কারণ।

জাপানের শেয়ার বাজারে, নিক্কেই ২২৫ সূচক সামান্য ০.২ শতাংশ কমে ৩৯,৮১৯.১১-তে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে। এছাড়া, জাপানে খাদ্য ও জ্বালানি বাদে মূল মুদ্রাস্ফীতি জুন মাসে বেড়ে ৩.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা মে মাসের ৩.৭ শতাংশের তুলনায় কম হলেও দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

অন্যদিকে, হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১.৩ শতাংশ বেড়ে ২৪,৮০৫.৭৪-এ পৌঁছেছে। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ০.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৩৪.৪৮-এ।

তাইওয়ানের Taiex সূচক ১.২ শতাংশ বেড়েছে, যার প্রধান কারণ ছিল তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (TSMC)-এর শেয়ারের দাম ২.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া। টিএসএমসি গত প্রান্তিকে প্রায় ৬১ শতাংশ মুনাফা অর্জন করেছে।

এই কোম্পানিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) সহ অন্যান্য খাতে শক্তিশালী চাহিদা লক্ষ্য করছে।

অস্ট্রেলিয়ার এসএন্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ১.৪ শতাংশ বেড়ে ৮,৭৫৭.২০-এ পৌঁছেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক সামান্য ০.১ শতাংশ কমে ৩,১৮৮.০৭-এ দাঁড়িয়েছে।

ভারতের সেনসেক্স সূচক ০.৭ শতাংশ কমেছে।

বাজারের এই ঊর্ধ্বগতির কারণ ব্যাখ্যা করে, এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের বিশ্লেষক স্টিফেন ইননেস বলেন, “এশিয়ার বাজার বিশ্ব বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের চাহিদা বাড়ছে এবং ফেডারেল রিজার্ভও নমনীয় নীতি গ্রহণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তবে বাজারের এই ইতিবাচকতার মাঝে অস্থিরতাও রয়েছে।”

বৃহস্পতিবার, এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ০.৫ শতাংশ বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে এবং ৬,২৯৭.৩৬ পয়েন্টে পৌঁছেছে। ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ০.৫ শতাংশ বেড়ে ৪৪,৪৮৪.৪৯ পয়েন্টে এবং নাসডাক কম্পোজিট ০.৭ শতাংশ বেড়ে ২০,৮৮৫.৬৫ পয়েন্টে পৌঁছে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক তথ্যও বেশ ইতিবাচক ছিল। খুচরা বাজারে ভোক্তাদের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য একটি ভালো লক্ষণ। এছাড়া, বেকারত্বের আবেদনও কমেছে।

এই পরিস্থিতিতে, ফেডারেল রিজার্ভ সম্ভবত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখতে পারে। ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল বলেছেন, তারা বাণিজ্য শুল্কের প্রভাব এবং মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে আরও তথ্য জানার জন্য অপেক্ষা করছেন।

শুক্রবার, অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে। ইউএস বেঞ্চমার্ক ক্রুড অয়েল ব্যারেল প্রতি ০.৫৫ ডলার বেড়ে ৬৬.৭৮ ডলারে এবং ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল ০.৫৮ ডলার বেড়ে ৭০.১০ ডলারে বিক্রি হয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি ইয়েনের সামান্য দর পতন হয়েছে।

ইউরো-র দামও বেড়েছে।

এই বাজারের গতিবিধি বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছু সুযোগ তৈরি করতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারের এই প্রবণতা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কেমন প্রভাব ফেলবে, তা এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *