শিরোনাম: আর্থিক নিয়মের জেরে উয়েফার নজরে অ্যাস্টন ভিলা।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে ক্লাবগুলোর আর্থিক ব্যবস্থাপনার উপর কড়া নজর রাখে উয়েফা। এবার সেই নিয়মের বেড়াজালে পড়তে যাচ্ছে ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা।
জানা গেছে, গত মৌসুমে খেলোয়াড়দের বেতন এবং দলবদলের খরচ সংক্রান্ত নিয়মের সীমা লঙ্ঘন করেছে ক্লাবটি।
উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোকে তাদের আয়ের নির্দিষ্ট একটি অংশ খেলোয়াড়দের পেছনে খরচ করতে হয়। গত মৌসুমে এই হার ছিল আয়ের ৮০ শতাংশ, যা চলতি মৌসুমে কমে ৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু অ্যাস্টন ভিলার হিসাব অনুযায়ী, তারা এই সীমা অতিক্রম করেছে। ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে তাদের খেলোয়াড়দের বেতন বাবদ খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫২ মিলিয়ন পাউন্ড, যেখানে তাদের আয় ছিল প্রায় ২৫৭.৭ মিলিয়ন পাউন্ড।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে উয়েফার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে অ্যাস্টন ভিলা কর্তৃপক্ষ। যদিও ক্লাবটি সরাসরি তাদের নিয়ম ভাঙার কথা স্বীকার করেনি, তবে তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এখনো প্রিমিয়ার লিগের লাভ ও স্থিতিশীলতা সংক্রান্ত নিয়ম মেনেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে, উয়েফার নিয়ম ভাঙা নিয়ে তাদের কোনো মন্তব্য ছিল না।
আর্থিক অনিয়মের কারণে অ্যাস্টন ভিলার উপর জরিমানা আসতে পারে। গত বছর হিসাব জমা দিতে দেরি হওয়ায় উয়েফা ক্লাবটিকে ৫২ হাজার পাউন্ড জরিমানা করেছিল।
এবারও তাদের আর্থিক শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উয়েফার ক্লাব ফাইনান্সিয়াল কন্ট্রোল বডি (CFCB) এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এবং তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে থাকে।
সম্ভাব্য শাস্তিস্বরূপ, অ্যাস্টন ভিলাকে একটি ব্যয় পরিকল্পনা জমা দিতে হতে পারে। যদি ক্লাবটি সেই পরিকল্পনা মানতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা রাখে উয়েফা।
অতীতে, আর্থিক নিয়মের লঙ্ঘনের কারণে ইতালির ক্লাব রোমাকে ১.৭৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হয়েছিল। এছাড়া, তুরস্কের ক্লাব ইস্তানবুল বাসাকসেহিরকে উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
তবে, অ্যাস্টন ভিলার ক্ষেত্রে এখনই তেমন কঠিন শাস্তি আসার সম্ভাবনা কম। সম্ভবত, ক্লাবটিকে তাদের খেলোয়াড়দের বেতন কমানোর জন্য চাপ দেওয়া হতে পারে।
সাধারণত, খেলোয়াড় বিক্রি করে আয় বাড়ানোর মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে ক্লাবগুলো। গত গ্রীষ্মে, অ্যাস্টন ভিলা ডগলাস লুইজ, ওমারি কেলিমান এবং টিম আইরোগবুনাম সহ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বিক্রি করে প্রায় ৭০ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করেছিল, যা তাদের প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম মানতে সাহায্য করেছিল।
এদিকে, একই ধরনের আর্থিক জটিলতায় পড়েছে চেলসিও। যদিও গত মৌসুমে তারা ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়নি, তাই তাদের উপর উয়েফার নিয়ম প্রযোজ্য ছিল না।
তবে, গত তিন বছরে তারা ক্ষতির যে সীমা (১৭০ মিলিয়ন পাউন্ড) নির্ধারণ করা হয়েছে, তা সম্ভবত তারা অতিক্রম করেছে। চেলসির মালিকপক্ষ অবশ্য খেলোয়াড়দের বেতন কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বর্তমানে, ফুটবল বিশ্বে আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য উয়েফা এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো বেশ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, ক্লাবগুলোকে তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আরও দায়িত্বশীল হতে উৎসাহিত করা।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।