খেলাধুলায় জড়িত শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা অপরিচিত কারও সঙ্গে স্বল্পকালীন শারীরিক সম্পর্কে জড়িত না হন। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এর ফলে নিষিদ্ধ ড্রাগ গ্রহণের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খেলাধুলার জগতে ডোপিং প্রতিরোধের নিয়ম আরও কঠোর করা হচ্ছে। সম্প্রতি এমন কিছু ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে ক্রীড়াবিদদের দেহে নিষিদ্ধ ড্রাগের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যার কারণ ছিল তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক।
উদাহরণস্বরূপ, টেনিস খেলোয়াড় রিচার্ড গ্যাসকুয়ের ঘটনা উল্লেখ করা যায়। তিনি একটি নাইট ক্লাবে এক নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পরে কোকেন গ্রহণের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
যদিও পরে প্রমাণ হয় যে, তিনি ওই নারীর চুম্বনের মাধ্যমে ড্রাগ দ্বারা দূষিত হয়েছিলেন।
মার্ক হোভেল নামের একজন ক্রীড়া আইন বিশেষজ্ঞ এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করা কঠিন, বিশেষ করে যখন সম্পর্কটি স্বল্পকালীন হয়। কারণ, সেই ব্যক্তির সঙ্গে পরবর্তীতে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়ে।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টি-ডোপিং সংস্থার প্রধান ট্রাভিস টাইগার্ট এই সতর্কবার্তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তিনি ২০১৬ সালের এক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ভার্জিনিয়া ফুক্স নামের এক মার্কিন বক্সারের শরীরে নিষিদ্ধ উপাদান পাওয়া গিয়েছিল।
পরে জানা যায়, তিনি তার সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছিলেন।
ট্রাভিস টাইগার্ট ক্রীড়াবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “কাউকে চুম্বন করার আগে এবং কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগে সতর্ক থাকুন।”
বিশ্ব অ্যান্টি-ডোপিং সংস্থাকে (WADA) তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, শরীরে স্বল্প পরিমাণে ড্রাগের উপস্থিতি ধরা পড়লে, খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আরও সতর্ক হতে হবে।
কারণ, অনেক সময় সামান্যতম দূষণের কারণেও খেলোয়াড়দের উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে।
টাইগার্ট মনে করেন, “আমাদের খেলোয়াড়দের এমন একটি পরিবেশে থাকতে হচ্ছে, যা বেশ উদ্বেগজনক।
তাই, আমরা চেষ্টা করছি এই নিয়মগুলো আরও বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য করার।” তিনি আরও যোগ করেন, “ডোপিংয়ের সঙ্গে জড়িত অনেক আসল অপরাধী ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়, কারণ আমরা সামান্য ঘটনার সমাধানে বেশি সময় ব্যয় করি।”
ক্রীড়া জগতে ডোপিং একটি গুরুতর সমস্যা।
খেলোয়াড়দের নিজেদের সুরক্ষার জন্য সচেতন থাকতে হবে এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খেলাধুলায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার স্বার্থে, এই বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান