আতঙ্ক! সেপ্টেম্বর জুড়ে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস: ভয়ঙ্কর কিছু অপেক্ষা করছে?

আটলান্টিক মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম বর্তমানে তার চূড়ান্ত সময়ে প্রবেশ করেছে, তবে প্রকৃতির নীরবতা সবাইকে খানিকটা অবাক করছে।

সাধারণত, গ্রীষ্মের শেষে আটলান্টিক অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের আনাগোনা বাড়ে, যা আগস্টের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে চলে এবং অক্টোবরের প্রথম দিকে এর প্রভাব দেখা যায়।

আবহাওয়াবিদদের মতে, ১০ই সেপ্টেম্বর তারিখটি এই ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের প্রধান সময়।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ৭৬ বছরের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ সময়েই এই তারিখে আটলান্টিকে কোনো না কোনো ঘূর্ণিঝড় সক্রিয় ছিল।

কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।

বর্তমানে আটলান্টিক মহাসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়নি, যা একটি বিরল ঘটনা।

সর্বশেষ ‘ফার্নান্ড’ নামক একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় ২৮শে আগস্টে দুর্বল হয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত আটলান্টিকে কোনো ঝড়ের পূর্বাভাস নেই।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম এত দীর্ঘ সময় ধরে আটলান্টিকে কোনো শক্তিশালী ঝড় সৃষ্টি হয়নি।

১৯৯২ সালে, ১৮ই সেপ্টেম্বর ‘বোনি’ নামক একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছিল।

সাধারণত, সেপ্টেম্বরে ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।

গ্রীষ্মের তাপে সমুদ্রের জল উষ্ণ হয়ে ওঠে, যা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।

এছাড়াও, বায়ুমণ্ডলে শুষ্ক ও স্থিতিশীল বাতাস এবং দুর্বল বায়ুপ্রবাহের কারণেও অনেক সময় ঝড় দুর্বল হয়ে যায়।

এ বছর এখন পর্যন্ত মাত্র ৬টি ঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে সাধারণত ৯ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে গড়ে আটটি ঝড়ের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যে ‘ইরিন’ নামক একটি ঘূর্ণিঝড় বেশ শক্তিশালী রূপ নিয়েছিল।

এই ঝড়টি দ্রুত গতিতে ক্যাটাগরি ৫ মাত্রায় পৌঁছেছিল।

যদিও এই বছর ঝড়ের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, তবে এর প্রভাব ছিল মারাত্মক।

টেক্সাসে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দেয় এবং উত্তর ক্যারোলিনাতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এছাড়াও, ‘ইরিন’ ক্যারিবীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও শক্তিশালী বাতাস বয়ে আনে।

আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

গত বছর, ‘হেলেন’ নামক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া এবং টেনেসির পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

এর আগে, ২০২২ সালে ‘ইয়ান’ নামক একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফ্লোরিডায় আঘাত হেনেছিল, যার ফলে সেখানে মারাত্মক জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা দেখা দেয়।

বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় একটি পরিচিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলো দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে।

তাই, আটলান্টিকের ঘূর্ণিঝড়ের এই পরিস্থিতি আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সময় আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।

বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র, প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী এবং জরুরি প্রস্তুতি রাখা আবশ্যক।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *