অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি আবারও জয়লাভ করেছে। শনিবারের এই নির্বাচনে লেবার পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।
বিরোধী দল লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের নেতা পিটার ডটন নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়েছেন এবং তিনি তার নিজের আসনটিও হারিয়েছেন।
নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, এবারের নির্বাচনের মূল বিষয় ছিল জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতাদের সম্পর্কের বিষয়টি। অর্থনৈতিক চাপ এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সম্ভাব্য যোগাযোগের কারণে বিরোধী দল বেশ চাপে ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার ১৫0 আসনের পার্লামেন্টে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হয় কমপক্ষে ৭৬টি আসন। নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে লেবার পার্টি সুস্পষ্টভাবে এই সংখ্যা অতিক্রম করে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, দলটি আগের নির্বাচনের চেয়ে এবার বেশি ভোট পেতে যাচ্ছে। অন্যদিকে, পিটার ডটনের দল লিবারেল-ন্যাশনাল জোটের ভোট কমেছে এবং তারা বেশ কয়েকটি আসন হারিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এর এই বিজয় অপ্রত্যাশিত ছিল না। কারণ, নির্বাচনের আগে জনমত জরিপে লেবার পার্টির অবস্থান বেশ ভালো ছিল।
অন্যদিকে, বিরোধী দল তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় কিছু ভুল করে, যা ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমনকি, পিটার ডটন ট্রাম্পের কিছু নীতির সঙ্গে নিজেদের মিল দেখানোর চেষ্টা করেছেন, যা তাদের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে।
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভালো ফল করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, পরিবেশ এবং সুশাসনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে যারা কাজ করেন, সেই ‘teal’ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের আসন ধরে রাখতে পারেন।
এছাড়াও, আঞ্চলিক কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও ভালো ফল করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নির্বাচন প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল ছিল, কারণ অস্ট্রেলিয়ায় বাধ্যতামূলকভাবে ভোট দিতে হয়। এছাড়াও, এখানে পছন্দের ভিত্তিতে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, যার ফলে ভোটের ফলাফল আসতে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার এই নির্বাচনের ফলাফল দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যেমন প্রভাব ফেলবে, তেমনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও এর কিছু প্রভাব দেখা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান