আতঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয়! ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগে কি বন্ধ হবে তহবিল?

অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি বিদ্বেষ মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রথম অ্যান্টিসেমিটিজম বিষয়ক বিশেষ দূত জিলিয়ান সেগল সম্প্রতি এই প্রস্তাব পেশ করেছেন।

প্রস্তাব অনুযায়ী, বিদ্বেষমূলক কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এছাড়া, ভিসা প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও তাদের চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি খতিয়ে দেখার কথা বলা হয়েছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অভিযানের পর অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে এ পর্যন্ত অ্যান্টিসেমিটিক হামলার সংখ্যা ৩০০ শতাংশ বেড়েছে।

সম্প্রতি মেলবোর্নে একটি সিনাগগে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, যেখানে ২০ জনকে জরুরি নির্গমনের মাধ্যমে পালাতে হয়। এছাড়া, ইসরায়েলি মালিকানাধীন একটি রেস্টুরেন্টে হামলার ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ‘ডাই টু আইডিএফ’ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সংক্ষিপ্ত রূপ) স্লোগান দেয়।

জিলিয়ান সেগল, যিনি একসময় অস্ট্রেলিয়ার ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রধান সংগঠন ‘এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল অফ অস্ট্রেলিয়ান জিউরি’র নেতৃত্ব দিয়েছেন, তার মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যান্টিসেমিটিজম ‘গড়ে গেছে এবং স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে’। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যান্টিসেমিটিজম প্রতিরোধের কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরির সুপারিশ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বিশেষ দূতের সঙ্গে ‘গঠনমূলকভাবে’ কাজ করছে এবং সুপারিশগুলো বিবেচনা করবে। তবে, ‘অস্ট্রেলিয়ান জিউইশ কাউন্সিল’ নামক একটি সংগঠন এই পরিকল্পনার সমালোচনা করে একে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার শামিল বলে উল্লেখ করেছে।

তাদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী কার্যক্রমের অনুরূপ।

প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটিতে শিক্ষাব্যবস্থা, অভিবাসন, গণমাধ্যম এবং জনসাধারণের সচেতনতা বিষয়ক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পাঠ্যক্রমে হলোকস্ট এবং ইহুদিবিদ্বেষের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।

এছাড়া, কোনো আর্ট সংস্থায় ইহুদিবিদ্বেষের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের সরকারি অনুদান বন্ধ করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের কোনো যুক্তি খুঁজে পায় না। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন, যেখানে অ্যালগরিদম ব্যবহারকারীদের চরমপন্থী অবস্থানে ঠেলে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ইসরায়েলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হতে পারে, তবে কাউকে কেবল ইহুদি হওয়ার কারণে দায়ী করাটা গ্রহণযোগ্য নয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *