অস্ট্রেলিয়ায় শিশুদের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের বয়সসীমা নির্ধারণ: বাংলাদেশে এর প্রভাব?
ডিসেম্বর মাস থেকে অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি নতুন নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে। এই নিয়ম অনুযায়ী, ১৬ বছরের কম বয়সী কোনো শিশু ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, এক্স (সাবেক টুইটার) এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না।
যদি কোনো প্ল্যাটফর্ম এই নিয়ম ভাঙতে সহায়তা করে, তবে তাদের প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা) জরিমানা করা হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার এই নতুন আইনের বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট জানিয়েছেন, esafety.gov.au ওয়েবসাইটে নতুন আইন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, টেলিভিশন, রেডিও এবং বিলবোর্ডের মাধ্যমেও সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো শিশুদের সামাজিক মাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচানো। দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী, অ্যানিকা ওয়েলস বলেছেন, “আমরা চাই শিশুরা তাদের শৈশব উপভোগ করুক। অভিভাবকদের মনে শান্তি আসুক।
আর তরুণ প্রজন্মের উচিত সামাজিক মাধ্যম তাদের জীবনকে প্রভাবিত করার আগে নিজেদের ভালোভাবে জানা।”
যদিও এই আইনটি অনেকের কাছে ইতিবাচক মনে হচ্ছে, তবুও কিছু বিশেষজ্ঞ এর সম্ভাব্য খারাপ দিকগুলো নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এই ধরনের কঠোর নিয়ম শিশুদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপের দিকে এখন অন্যান্য দেশও নজর রাখছে। ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ইঙ্গ্রিড ডাল-মাদসেন জানিয়েছেন, তার দেশ শিশুদের সামাজিক মাধ্যমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আলোচনা করছে।
ডেনমার্ক সরকারও ১৫ বছর বয়স নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে, তবে তারা ১৩ ও ১৪ বছর বয়সীদের জন্য অভিভাবকদের অনুমতি সাপেক্ষে ছাড় দিতে পারে।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে শিশুদের অনলাইনে সুরক্ষিত রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশেও সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো বেশ জনপ্রিয়। এমতাবস্থায়, অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হতে পারে।
আমাদের দেশেও শিশুদের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের উপযুক্ত বয়সসীমা নির্ধারণ করা যায় কিনা, সে বিষয়ে নতুন করে ভাবা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস