হঠাৎ হৃদরোগ: অস্ট্রেলিয়ার এই রাজ্যে বাঁচার হার বিশ্বে সেরা!

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের বাঁচানোর হার বিশ্বে অন্যতম, যা উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এখানে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ফিরে আসার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, দ্রুত সাড়া প্রদান এবং জনসাধারণের সচেতনতাই এই সাফল্যের মূল কারণ।

২০২৪ সালে, অস্টিন ব্লাইট নামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর খেলাধুলা করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত কর্মীরা সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) শুরু করেন এবং একটি স্বয়ংক্রিয় বাহ্যিক ডিফিব্রিলেটর (এইডি)-এর মাধ্যমে তার হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনেন।

বর্তমানে অস্টিন সুস্থ জীবন যাপন করছে এবং বিদ্যালয়ে ফিরে গেছে।

ভিক্টোরিয়ার এই সাফল্যের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, এখানে দ্রুত সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী। জনসাধারণের মধ্যে সিপিআর প্রশিক্ষণ ব্যাপক এবং ৭,৫০০ এর বেশি স্থানে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য এইডি (অটোমেটেড এক্সটারনাল ডিফিব্রিলেটর) স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়াও, ‘গুডস্যাম’ নামক একটি অ্যাপের মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা পাওয়া যায়। এই অ্যাপের মাধ্যমে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের খবর দেওয়া হয়, যারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করতে পারেন।

ভিক্টোরিয়া রাজ্যের অ্যাম্বুলেন্স বিভাগের গবেষণা ও মূল্যায়ন পরিচালক ড. জিয়াদ নেহমে এই সাফল্যের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন দ্রুত সিপিআর এবং ডিফিব্রিলেশন প্রদান করা গেলে রোগীর জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

২০২৩-২০২৪ সালের হিসাবে, ভিক্টোরিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ফিরে আসার হার ছিল ৪১ শতাংশ। যেখানে ২০২২-২৩ সালে এই হার ছিল ৩৬ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিক্টোরিয়ার এই সাফল্য শুধু একটি রাজ্যের জন্য গর্বের বিষয় নয়, বরং এটি সারা বিশ্বের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয়। বাংলাদেশেও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

এক্ষেত্রে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, সিপিআর প্রশিক্ষণ এবং জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম সহজলভ্য করার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *