ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে ভীত, মার্কিন সম্মেলনে যাওয়া বন্ধ করছেন অস্ট্রেলীয় শিক্ষক!

যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া থেকে বিরত থাকছেন অস্ট্রেলীয় শিক্ষাবিদেরা। এর কারণ হিসেবে তাঁরা মার্কিন সীমান্ত নিরাপত্তা এবং ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার আশঙ্কা করছেন। তাঁদের মতে, বিশেষ করে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেখানে গেলে হয়রানির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্প্রতি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাওয়া কয়েকজন অস্ট্রেলীয় শিক্ষাবিদ তাঁদের যাত্রা বাতিল করেছেন। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো, সীমান্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দ্বারা তাঁদের ডিভাইস তল্লাশি এবং প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ার ভয়। এমনকি, অনেকের ভিসা পেতেও সমস্যা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক এবং অস্ট্রেলীয় পোস্টগ্র্যাজুয়েট অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিলের জাতীয় সভাপতি জেম্মা লুসি স্মার্ট। তিনি জানান, তাঁর পরিচিত একজন গবেষক, যিনি রূপান্তরকামী (ট্রান্সজেন্ডার), একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁকে সেখানে যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

গবেষকদের এই উদ্বেগের কারণ হিসেবে জানা যায়, মার্কিন সীমান্ত কর্মকর্তারা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, ইমেইল, টেক্সট মেসেজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরীক্ষা করার ক্ষমতা রাখেন। কোনো ব্যক্তি তাঁদের এই কাজে বাধা দিলে, তাঁকে প্রবেশের অনুমতি নাও দেওয়া হতে পারে। এমনকি, তাঁদের আটকও করা হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল টারশিয়ারি এডুকেশন ইউনিয়ন (National Tertiary Education Union) জানিয়েছে, তাদের সদস্যরাও মার্কিন নীতির পরিবর্তনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেক শিক্ষাবিদ তাঁদের গবেষণা চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন, আবার কারো কারো গবেষণা অনুদানও বন্ধ হয়ে গেছে।

ইউনিয়নের জাতীয় প্রেসিডেন্ট ড. অ্যালিসন বার্নস বলেন, “শিক্ষাবিদদের মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেকেই এখন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মেলনে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে তাঁদের কর্মজীবনে। এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা অংশীদারিত্বও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই পরিবর্তনগুলো আন্তর্জাতিক জ্ঞান আদান-প্রদানকে বাধাগ্রস্ত করছে, যা বর্তমানে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সমাজের (Science, Technology and Society) বিভিন্ন গবেষক দলও তাঁদের সম্মেলন অনলাইনে করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত পরিস্থিতি এখন “অপ্রত্যাশিত”।

এসব কারণে অস্ট্রেলীয় শিক্ষাবিদদের মধ্যে এখন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে অনীহা দেখা যাচ্ছে। তাঁরা মনে করছেন, এতে তাঁদের গবেষণা এবং কর্মজীবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *