ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণের অভিযোগে এক অস্ট্রেলীয় নাগরিককে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার রুশ নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের লুহানস্কে একটি আদালত এই রায় ঘোষণা করে।
অভিযুক্তের নাম অস্কার জেনকিন্স (৩৩)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছর মার্চ থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে জেনকিন্স ইউক্রেনীয় বাহিনীর হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। তাকে ভাড়াটে সৈন্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রাশিয়ার সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, জেনকিন্সকে প্রতি মাসে ৭,৪০০ থেকে ১০,০০০ মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৮ লক্ষ থেকে ১১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি) বেতন দেওয়া হতো।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং এই রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এটিকে ‘ভিত্তিহীন বিচার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং রাশিয়ার প্রতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে জেনকিন্সের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়া সরকার জেনকিন্সের মুক্তি চেয়ে আসছে এবং ইউক্রেন ও অন্যান্য সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে মিলে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
জেনকিন্সকে গত ডিসেম্বরে রুশ বাহিনী আটক করে। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় রুশ ভাষায় কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায়।
ছবিতে জেনকিন্সকে একটি কাঁচের খাঁচায় দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যায়, তার হাত পিছনে বাঁধা ছিল।
রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, ভাড়াটে সৈন্যদের যুদ্ধবন্দীর মর্যাদা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং তাদের ফৌজদারি অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আদালত জেনকিন্সকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা-সংবলিত কারাগারে বন্দী রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজও জেনকিন্সের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি তার মুক্তির জন্য পুনরায় আবেদন করার কথা জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া সরকার ইউক্রেনকে ২০২২ সাল থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে এবং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণও দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জেনকিন্স সম্ভবত ইউক্রেনীয় বাহিনীর আন্তর্জাতিক ব্রিগেডে যোগ দিয়েছিলেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন