অস্ট্রেলিয়ার এক নারীর বিরুদ্ধে শ্বশুর-শাশুড়িকে বিষাক্ত মাশরুম খাইয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এবার তার স্বামীর বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। আদালত জানিয়েছে, ওই নারী তার স্বামীকে বিষ মেশানো পাস্তা, চিকেন কারি এবং স্যান্ডউইচ খাইয়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন।
গত মাসে, জুরিরা জানতে পারেন যে এরিন প্যাটারসন নামের ওই নারী তার শ্বশুর-শাশুড়ি গেইল প্যাটারসন, ডন প্যাটারসন এবং গেইলের বোন হিদার উইলকিনসনকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তিনি তাদের ‘বিফ ওয়েলিংটন’ পরিবেশন করেন, যাতে ছিল ডেথ ক্যাপ মাশরুম। এই খাবার খেয়ে তারা মারা যান।
এছাড়া, এরিনকে হিদার উইলকিনসনের স্বামী ইয়ান উইলকিনসনকে হত্যার চেষ্টা করার দায়েও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ইয়ান ২০১৫ সালের ওই রাতের খাবার খেয়েও প্রাণে বেঁচে যান।
২০২৩ সালে এরিনের বিরুদ্ধে হত্যার তিনটি এবং হত্যার চেষ্টার পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। অতিরিক্ত চারটি অভিযোগ ছিল তার প্রাক্তন স্বামী সাইমন প্যাটারসনকে কেন্দ্র করে। বিচারক ক্রিস্টোফার বিয়েল এর আগে রায় দিয়েছিলেন যে অভিযোগগুলো দুটি পৃথক বিচারের অধীনে আনা হবে।
তবে, প্রথম বিচারের প্রাক্কালে সাইমন প্যাটারসনকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগগুলো বাদ দেওয়া হয়।
এর ফলে, ২০২১ ও ২০২২ সালে তার স্বামীর জীবননাশের চেষ্টারDetails of the alleged attempts on her husband’s life in 2021 and 2022 were never heard by the jury. বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
আদালতে সাইমন প্যাটারসন জানান, প্রথমবার অসুস্থ হওয়ার পরই তিনি সন্দেহ করতে শুরু করেন যে এরিনের খাবার থেকেই তার অসুস্থতা হচ্ছে। তিনি তার অসুস্থতার একটি তালিকা তৈরি করতে শুরু করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে এরিনের রান্না করা খাবার খাওয়ার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
খাবারগুলোর মধ্যে ছিল পেনে বোলোগনিজ, চিকেন কারি এবং স্যান্ডউইচ।
অভিযোগ অনুযায়ী, দুটি ক্যাম্পিং ট্রিপ ও একটি হাঁটার সময় তাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়, যার ফলে তিনি মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে সাময়িকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তার কিছু অন্ত্র অপসারণ করতে হয়।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই, ডাক্তাররা তার অসুস্থতার কারণ নিশ্চিত করতে পারেননি। সাইমন তার ডাক্তার এবং পরিবারের কাছে, এমনকি তার বাবা ডনের কাছেও তার সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন। ডন প্যাটারসন জুলাই ২০২৩-এর দুপুরের খাবারে বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছিলেন এবং হাসপাতালে যাওয়ার সময় পরীক্ষার জন্য নিজের বমিও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
এরিনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা একটি কম্পিউটারের তথ্য থেকে জানা যায়, তিনি অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান সম্পর্কেও অনুসন্ধান করেছিলেন। তবে, এই তথ্যগুলোও বিচার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিচারক বিয়েল গত মাসে এরিনকে দোষী সাব্যস্ত করার পর, আপিলের অধিকার রক্ষার জন্য মামলার আগের তথ্যের প্রকাশনা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে, শুক্রবার তিনি সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, উন্মুক্ত বিচার ব্যবস্থা আমাদের বিচার বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এরিন প্যাটারসনের আপিল করার সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে, রায় ঘোষণার ২৮ দিনের মধ্যে তিনি আপিল করতে পারবেন।
মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৫শে আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য পাঠ করা হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন