ঐতিহাসিক উপন্যাস লেখিকা সারা পেনারের অনুসন্ধিৎসু মন, তাঁকে পৌঁছে দেয় সমুদ্রের গভীরে, এমনকি অতীতেও। তাঁর লেখার জগৎ তৈরি হয় বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, যা পাঠকদের এনে দেয় অন্যরকম স্বাদ।
“দ্য লস্ট অ্যাপোথেকারি”, “দ্য লন্ডন সিয়েন্স সোসাইটি”র মতো জনপ্রিয় বইয়ের লেখিকা সারা পেনারের আসন্ন বই “দ্য অ্যামালফি কার্স” (The Amalfi Curse) প্রকাশের অপেক্ষায় পাঠকেরা।
পেনারের মতে, শুধু লাইব্রেরিতে বসে গবেষণা করলে তাঁর উপন্যাসের গভীরতা তৈরি হয় না। তাই তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ছুটে যান বিভিন্ন স্থানে।
পুরনো দিনের লন্ডনের নদীতে ডুব দিয়ে ঐতিহাসিক নিদর্শন খুঁজেছেন, এমনকি আত্মাদের সঙ্গে কথা বলার আসরেও যোগ দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, “পাঠকেরা যখন একটি বই হাতে নেন, তখন তাঁরা চান সেই গল্পের মধ্যে ডুবে যেতে। আর আমার কাজ হল, তাঁদেরকে সেই অভিজ্ঞতার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া, যা তাঁরা হয়তো বাস্তবে পান না।”
পেনারের বইগুলির বিশেষত্ব হল, এতে ঘটনার বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। জাদুঘরের কাঁচের আলমারিতে রাখা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের বদলে, তিনি সরাসরি সেই স্থানে গিয়ে সবকিছু খুঁটিয়ে দেখতে পছন্দ করেন।
তাঁর কথায়, “যখন আপনি নিজে সেই স্থানে যান, তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই উন্মুক্ত থাকে। আপনি নিজের মতো করে সেটিকে অনুভব করতে পারেন। এটাই আমার ভালো লাগে।”
তবে, প্রচলিত পদ্ধতির বাইরেও তিনি অনেক সময় অনুপ্রেরণা খুঁজে পান। “দ্য লস্ট অ্যাপোথেকারি” বইটি লেখার সময় তিনি ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে যান।
সেখানে ১৭০০ শতকের একটি পুরনো ফার্মাসিস্টের জার্নাল খুঁজে পান। সেই বইয়ের পাতায় একটি আঙুলের ছাপ এবং একটি বিড়ালের পায়ের ছাপ দেখে তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন।
তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি যেন সেই ব্যক্তির খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন, যদিও তাঁর সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি।
সারা পেনারের উপন্যাসগুলি সাধারণত কোনো স্থানকে কেন্দ্র করে শুরু হয়। তিনি প্রথমে একটি জায়গা নির্বাচন করেন, যা তাঁকে আকর্ষণ করে। তারপর সেই এলাকার ইতিহাস সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন।
তাঁর কল্পনাশক্তি সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গল্প তৈরি করতে থাকে।
“দ্য অ্যামালফি কার্স” বইটির জন্য, ইতালির পসিটানো গ্রামের কাছে অ্যামালফি উপকূলের রহস্যময় জাহাজগুলোর অনুসন্ধানে নেমেছিলেন তিনি। এই কাজের জন্য তিনি এবং তাঁর স্বামী ডুবুরি হিসেবে প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন।
সারা পেনারের মতে, “আমি একজন নার্ভাস ডুবুরি, কিন্তু গল্পের প্রয়োজনে গভীর সমুদ্রের ভীতিকে জয় করতে চেয়েছি।”
ভবিষ্যতে সারা পেনারের আরও কিছু নতুন গল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা অথবা চেক প্রজাতন্ত্রের প্রাগে তাঁর উপন্যাস লিখতে চান।
এছাড়াও, অ্যান্টার্কটিকা, আলাস্কার দুর্গম অঞ্চল, দক্ষিণ আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গাগুলোও তাঁর পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল