অটোমেটেড কণ্ঠ: কণ্ঠশিল্পী ৫ লাখ ডলার কিভাবে আয় করেন, ফাঁস!

শিরোনাম: কণ্ঠের জাদুকরী: ভয়েস ওভার শিল্পী টাওনি প্লাটিস, যিনি শুধু কণ্ঠ দিয়ে আয় করেন কোটি টাকা!

ছোট্টবেলায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা টাওনি প্লাটিস, বর্তমানে একজন সফল ভয়েস ওভার শিল্পী। ৩৫ বছর বয়সী এই আমেরিকান শিল্পী, তাঁর কণ্ঠের জাদুতে বিশ্বজুড়ে পরিচিত।

বিশেষ করে, স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটেড) ভয়েস ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি আয় করেছেন প্রায় ৫ কোটি টাকার বেশি!

ক্যারিয়ারের শুরুতে স্থানীয় কিছু বিজ্ঞাপনে কণ্ঠ দেওয়ার সুযোগ হয় টাওনির। সময়ের সাথে সাথে বাড়ে কাজের সুযোগ, বাড়ে পরিচিতি।

বর্তমানে, জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হুলু (Hulu), ডিজনি প্লাস (Disney+) এর মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন অ্যানিমেশন এবং ভিডিও গেমেও তাঁর কণ্ঠ শোনা যায়।

প্লাটিসের মতে, ভয়েস ওভারের জগৎটা অনেকটা রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মতো। এখানে প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, সময় এবং লেগে থাকার মানসিকতা।

রাতারাতি খ্যাতি পাওয়া যায় না, বরং সময়ের সাথে কৌশল এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের স্থান তৈরি করতে হয়। “ভয়েস ওভার শিল্পী হওয়াটা কোনো ‘ছোট্ট রাস্তা’ নয়, বরং একটি ব্যবসা।

এখানে অনেক অডিশন দিতে হয়, মিটিং করতে হয়, এবং বিনিয়োগ করতে হয়। খ্যাতি পেতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে,”- এমনটাই জানান তিনি।

পেশাদারিত্ব এবং নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপনের ক্ষমতা, এই দুইয়ের মাধ্যমেই অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করেছেন টাওনি। তাঁর কণ্ঠের বৈচিত্র্য এবং অভিনয় দক্ষতা, দুটোই এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

টাওনির মতে, “অনেকেই সুন্দর কণ্ঠের অধিকারী, তবে অভিনয় দক্ষতার অভাবে তাঁরা পিছিয়ে পড়েন।”

টাওনির সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো, তিনি তাঁর কণ্ঠকে বিভিন্ন কাজে লাগিয়েছেন। স্বয়ংক্রিয় ভয়েসের মাধ্যমে আয়ের বিষয়টি তেমন একটি উদাহরণ।

বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানি তাঁর কণ্ঠ ব্যবহার করে, যার বিনিময়ে তিনি নিয়মিত সম্মানী পান। এছাড়াও, ভিডিও গেম এবং অ্যানিমেশনে কাজ করতে তিনি ভালোবাসেন, কারণ এতে চরিত্র নির্মাণের সুযোগ থাকে।

সম্প্রতি, জনপ্রিয় ভিডিও গেম ‘সিম্ফনি অফ ওয়ার: দ্য নেফিলিম সাগা’র পরবর্তী সংস্করণে প্রধান চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন টাওনি। এই কাজটি তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।

বিজ্ঞাপন এবং ই-লার্নিং প্রকল্পের জন্য, সাধারণত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্বাভাবিক কণ্ঠ ব্যবহার করেন টাওনি। এছাড়া, অডিওবুকের জন্য প্রয়োজন হয় গভীর, গম্ভীর কণ্ঠ, যা তাঁর কণ্ঠের একটি বিশেষত্ব।

তবে, টাওনির জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো এমন চরিত্রে কণ্ঠ দেওয়া, যেখানে পরিণত বয়সের মানুষের কণ্ঠ দরকার হয়। কারণ, বাস্তবে তাঁর কণ্ঠ শুনলে নাকি তাঁকে আট বছরের শিশুর মতো শোনায়!

ভয়েস ওভারের পাশাপাশি, টেক্সট-টু-স্পিচ (TTS) শিল্পী হিসেবেও কাজ করেন টাওনি। তাঁর মতে, এই ধরনের কাজ ছোট ব্যবসার মালিক এবং স্বতন্ত্র লেখকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে একটি সাশ্রয়ী মূল্যে গুণগত মানসম্পন্ন ভয়েস ওভার তৈরি করা সম্ভব হয়।

বর্তমানে, টাওনির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কাজের ভারসাম্য বজায় রাখা। তাঁর হাতে এত কাজ যে, কোন কাজটি ছেড়ে দেবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতেও মাঝে মাঝে দ্বিধায় পড়তে হয়।

তবে, প্রতিদিন নতুন কিছু করার সুযোগ পাওয়াটা তাঁর কাছে আনন্দের।

তথ্য সূত্র: পিপল ম্যাগাজিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *