মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল খেলোয়াড় আজি ফুডের (Azzi Fudd) হাঁটুতে গুরুতর আঘাত পাওয়ার পর, তার সুস্থ হয়ে ফিরে আসার পথে এগিয়ে এলেন গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্স-এর তারকা খেলোয়াড় স্টিফেন কারি (Stephen Curry)। খেলার মাঠ থেকে দূরে, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কঠিন সময়ে ফুডকে প্রয়োজনীয় সহায়তা জুগিয়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
আজি ফুড, যিনি কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Connecticut) হয়ে বাস্কেটবল খেলেন, ২০২১ সালের নভেম্বরে কারির ‘এসসি৩০’ (SC30) ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হন। এর কয়েক বছর পরেই, ২০২৩ সালের নভেম্বরে অনুশীলনের সময় তার হাঁটুতে গুরুতর আঘাত লাগে।
পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ডান হাঁটুতে ‘এন্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট’ (ACL) এবং ‘মেডিয়াল মেনিস্কাস’ ছিঁড়ে গেছে। এই আঘাতের কারণে অস্ত্রোপচার করতে হয় তাকে এবং দীর্ঘ পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
আজি ফুডের বাবা-মা, টিম এবং ক্যাটি ফুড, তাদের মেয়ের এই কঠিন সময়ে কিভাবে সাহায্য করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তখনই এগিয়ে আসেন স্টিফেন কারি।
তিনি ও তার প্রশিক্ষক দল ফুডের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার দায়িত্ব নেন। তারা একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করেন এবং প্রত্যেকটি ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এছাড়া, কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণ দলের সঙ্গে সমন্বয় করে ফুডের সুস্থ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তারা।
কারির কর্মদক্ষতা বিষয়ক পরিচালক কার্ল বার্গস্ট্রম এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমি সবসময় চেয়েছি সেরা একটি দল তৈরি করতে। ভার্চুয়ালি বা দূর থেকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালানো কঠিন, কিন্তু আমাদের কাছে যে সুযোগ ছিল, তার মাধ্যমে আমি বিশ্বের সেরা কিছু বিশেষজ্ঞকে একত্র করতে পেরেছি।”
আজি ফুড জানিয়েছেন, স্টিফেন কারি শুধু একজন খেলোয়াড় নন, বরং একজন ভালো মনের মানুষও। তিনি সবসময় তার পাশে ছিলেন এবং প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করেছেন।
ফুড আরও বলেন, “এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় স্টিফেনের (কারির) সমর্থন ছাড়া আমার পক্ষে ফিরে আসা সম্ভব হতো না।”
আঘাত পাওয়ার পর, ফুড ২০২৩-২৪ মৌসুমের অধিকাংশ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন। তবে, কারির সহায়তায় তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং বর্তমানে দ্বিতীয় বাছাই হিসেবে এনসিএএ টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে আজি ফুড প্রথম নারী খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন ছিলেন যিনি কারির বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নিয়েছিলেন।
স্টিফেন কারি বলেন, “আজি আমাদের পরিবারের একজন। আমরা চেয়েছিলাম মাঠের বাইরের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাকে সহায়তা করতে, যাতে সে বাস্কেটবলের ব্যবসা সম্পর্কে জানতে পারে। আঘাত লাগা স্বাভাবিক, আমরা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম, সে যেন সেরা চিকিৎসা পায় এবং দ্রুত মাঠে ফিরতে পারে।”
আজি ফুডের দ্রুত আরোগ্য লাভের পেছনে ‘টিম আজি’ নামে একটি বিশেষ দলের অবদান ছিল, যেখানে কারির প্রশিক্ষক দল এবং কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।
তারা নিশ্চিত করেছেন, ফুড যেন সঠিক সময়ে পুনর্বাসনের প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করতে পারেন এবং কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো না করেন।
আজি ফুড তার এই প্রত্যাবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি এখন যেখানে আছি, তার পেছনে সবার অবদান রয়েছে।”
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস