ছোট্ট শিশুদের অতি পরিচিত গান ‘বেবি শার্ক’ নিয়ে হওয়া কপিরাইট বিতর্কের অবসান ঘটল দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বোচ্চ আদালতে। গানটির স্বত্ব নিয়ে হওয়া মামলায় জনপ্রিয় ‘বেবি শার্ক’ গানের নির্মাতাদের পক্ষেই রায় দিয়েছে আদালত।
ফলে, গানটির জনপ্রিয়তার পেছনে থাকা কোম্পানি ‘পিঙ্কফং’-কে মুক্তি দিয়েছে আদালত।
আসলে, ২০১৯ সালে আমেরিকান শিল্পী জোনাথন রাইট, যিনি ‘জনি অনলি’ নামেই পরিচিত, ‘বেবি শার্ক’ গানটি নিজের বলে দাবি করে পিঙ্কফং-এর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, পিঙ্কফং তাঁর আগের তৈরি করা ‘বেবি শার্ক’ গানটি নকল করেছে।
ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিনি প্রায় ২১,৬০০ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দাবি করেছিলেন।
কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার সুপ্রিম কোর্ট জোনাথন রাইটের এই দাবি খারিজ করে দেয়। আদালতের মতে, রাইটের তৈরি করা গানটি মৌলিক নয়, কারণ এর আগে থেকেই ‘বেবি শার্ক’ নামে একটি লোকসংগীত প্রচলিত ছিল।
এছাড়া, রাইট তাঁর গানে উল্লেখযোগ্য কোনো নতুনত্ব যোগ করেননি।
আদালতের রায়ে বলা হয়, “বাদীপক্ষের গানটিকে কপিরাইট সুরক্ষার আওতায় আনা কঠিন, কারণ এটি মূল গানের থেকে তেমন কোনো পরিবর্তন আনেনি, যা এটিকে আলাদা কাজ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে।”
যদিও ‘বেবি শার্ক’ গানটি প্রথম বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পায় পিঙ্কফং-এর দৌলতে, যারা তাদের তৈরি করা ‘বেবি শার্ক ডান্স’ ইউটিউবে আপলোড করে। গানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে, ইউটিউবে এর ভিউ দাঁড়িয়েছে ১৬ বিলিয়নের বেশি।
গানটির ‘ডু ডু ডু ডু ডু ডু’ লাইনটি শিশুদের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। এই গানের জনপ্রিয়তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে টিভি শো, সিনেমা এবং স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন, যা পিঙ্কফং-এর জন্য কোটি কোটি টাকার ব্যবসা এনেছে।
জোনাথন রাইট তাঁর ‘বেবি শার্ক’ গানটি ২০১১ সালে ইউটিউবে আপলোড করেন। তাঁর তৈরি করা গানেও ‘ডু ডু ডু ডু’ লাইনটি ছিল।
২০১৬ সালে পিঙ্কফং তাদের অ্যানিমেটেড সংস্করণ প্রকাশ করে, যেখানে কার্টুন শার্কদের গান গাইতে দেখা যায়।
আদালতে শুনানির সময় প্রধান বিষয় ছিল, রাইটের সংস্করণটি মূল গানের ‘সেকেন্ডারি ওয়ার্ক’ হিসেবে গণ্য করা যায় কিনা এবং পিঙ্কফং তাঁর কাজ থেকে প্রভাবিত হয়ে গানটি তৈরি করেছে কিনা।
আদালত রায় দেয়, রাইট গানের স্বত্ব পাওয়ার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করেননি। এছাড়া, পিঙ্কফং এবং রাইটের গানের মধ্যে তেমন কোনো মিলও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে, ‘বেবি শার্ক’ সারা বিশ্বে শিশুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। গানটি এতটাই পরিচিত যে, বিভিন্ন দেশে এর চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন