এখানে বাল্টিক সাগরে জার্মানি থেকে ডেনমার্কের একটি মনোরম সমুদ্রযাত্রার অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হলো।
ইউরোপ ভ্রমণে আগ্রহী বাঙালিদের জন্য ডেনমার্কের একটি দ্বীপ, Ærø (আইরো) – তে ঐতিহাসিক একটি নৌকায় চড়ে ভ্রমণের এক দারুণ সুযোগ রয়েছে। জার্মানির কিয়েল বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে কিল ক্যানাল পাড়ি দিয়ে এই দ্বীপে পৌঁছানো যায়।
“পেগি” নামের ১৯০৩ সালে তৈরি একটি পুরনো কাঠের পালতোলা নৌকায় চড়ে এই যাত্রা করা ছিল এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
যাত্রাপথে, কিয়েল ক্যানাল ছিল নৌ চলাচলের দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত একটি পথ। প্রতিদিন এখানে প্রায় ৩৫,০০০ জাহাজ চলাচল করে।
এই ক্যানালটি জার্মানির উত্তর সাগর এবং বাল্টিক সাগরের মধ্যে প্রায় ৯৯ কিলোমিটার পথ কমিয়ে দেয়, যা ১৮৯৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল।
ক্যানালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখা যায় সবুজ গাছপালা আর নদীর ধারে ফুটে থাকা শাপলা ফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এরপর কিয়েল ফিয়র্ডে পৌঁছে, পাল তুলে বাতাসকে সঙ্গী করে এগিয়ে যাওয়া ছিল এক অসাধারণ অনুভূতি।
সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে নৌকার মাস্তুল ও পালের শব্দ যেন এক সুরের সৃষ্টি করে।
প্রায় ৬,০০০ মানুষের বসবাস করা Ærø দ্বীপটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এখানকার লোকেরা বিনামূল্যে বাস পরিষেবা উপভোগ করে এবং এখানে রয়েছে চমৎকার সমুদ্র সৈকত ও সুন্দর গ্রাম।
দ্বীপটিতে রয়েছে মেরিটাইম মিউজিয়াম, যেখানে পুরনো দিনের জাহাজের মডেল ও ছবি দেখা যায়। এছাড়াও, শিশুদের জন্য রয়েছে খেলার জায়গা, যেখানে তারা ক্যাপ্টেন ব্রিজের অভিজ্ঞতা নিতে পারে।
দ্বীপের প্রধান বন্দর, মারস্টালে (Marstal) পৌঁছে পর্যটকেরা এখানকার রেস্টুরেন্টে বসে সি-ফুডের স্বাদ নিতে পারে। এরপর পায়ে হেঁটে এখানকার ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখা যেতে পারে।
এখানকার স্থানীয়রা খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং অতিথিপরায়ণ।
দ্বীপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত Ærøskøbing (আইরোকবিং) গ্রামে হেঁটে যাওয়াটাও একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। এখানে শতবর্ষী পুরনো বাড়িগুলো আজও তাদের নিজস্বতা ধরে রেখেছে।
যারা প্রকৃতি ও শান্ত পরিবেশ ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই দ্বীপ ভ্রমণ হতে পারে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান