শেখ হাসিনার দল নিষিদ্ধ! বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে?

শিরোনাম: শেখ হাসিনার দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা: অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড়

ঢাকা, [আজকের তারিখ]। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সকল প্রকার রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

শনিবার রাতে সরকারের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) প্রতিবাদকারীদের মৃত্যু নিয়ে দলটির নেতাদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত।

গত বছর ছাত্র আন্দোলনের জেরে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার দলের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠলো।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ হলো, আইসিটিতে প্রতিবাদকারীদের মৃত্যুর ঘটনায় দলটির শীর্ষ নেতাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গত জুলাই মাসে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন এবং এর পরবর্তী সময়ে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। এই পরিস্থিতিতে সরকার অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইছে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। দলের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “অবৈধ সরকারের সকল সিদ্ধান্তই অবৈধ।”

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

তাঁদের মতে, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ঐক্যের প্রয়োজন, যা এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাহত হতে পারে।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি, সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনেও পরিবর্তন এনেছে।

এর ফলে, দলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের হত্যার অভিযোগের বিচার আরও সহজ হবে।

এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন থেকে ফিরে আসার পর, দেশে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে জল্পনা চলছে।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা রাজনৈতিক সংস্কারের ওপর জোর দিচ্ছেন এবং ২০২৬ সাল পর্যন্ত নির্বাচনের সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপগুলো দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে।

এই পরিস্থিতিতে, দেশের সাধারণ মানুষ একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশের প্রত্যাশা করছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *