বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম-এর নেতৃত্বে একটি বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল, নারীদের অধিকার সুরক্ষায় প্রস্তাবিত কিছু আইনি সংস্কারের বিরোধিতা করা।
বিশেষ করে, মুসলিম নারীদের জন্য সম্পত্তির অধিকারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সমানাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে সংস্কার প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধেই ছিল তাদের প্রধান আপত্তি।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা, যাদের সংখ্যা কয়েক হাজার ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি জড়ো হয়েছিলেন। তাদের অনেকের হাতে ছিল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড।
যেখানে “আমাদের নারীদের উপর পাশ্চাত্যের আইন চলবে না, জেগে ওঠো বাংলাদেশ” -এর মতো স্লোগান লেখা ছিল।
হেফাজতে ইসলামের নেতারা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত এই সংস্কারগুলো শরিয়া আইনের পরিপন্থী। তারা আরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার যদি তাদের দাবি না মানে, তাহলে ২৩শে মে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।
সমাবেশে বক্তৃতাকালে, হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানান। একইসঙ্গে, সংস্কার কমিশনের সদস্যদের শাস্তি দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
মামুনুল হকের মতে, এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ‘অনুভূতিতে আঘাত’ করেছে, কারণ তারা উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ধর্মীয় আইনকে নারী-পুরুষের মধ্যেকার বৈষম্যের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
শুধু তাই নয়, হেফাজতে ইসলামের নেতারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করারও দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা হারানোর আগে শত শত ছাত্র ও অন্যান্য মানুষকে হত্যা করেছে। বর্তমানে শেখ হাসিনা নির্বাসনে ভারতে অবস্থান করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর বাংলাদেশে ইসলামপন্থী দলগুলোর প্রভাব বেড়েছে। বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের উপর ভীতিকর পরিস্থিতির অভিযোগ করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে, নারীদের অধিকার বিষয়ক আইনি সংস্কার নিয়ে হেফাজতে ইসলামের এই সমাবেশ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস