মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রভাবশালী ধর্ম প্রচারক, ডগলাস উইলসন, দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে খ্রিষ্টান আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করছেন। তাঁর এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রক্ষণশীলদের একটি শক্তিশালী জোট, যাদের মধ্যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীও রয়েছেন।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে উইলসন-এর একটি নতুন চার্চ খোলা হয়েছে, যা এই আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উইলসন-এর মূল লক্ষ্য হলো, আমেরিকার সমাজে খ্রিষ্টান ধর্মভিত্তিক একটি শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। তিনি মনে করেন, সমাজের সকল ক্ষেত্রে বাইবেলের নীতিগুলি অনুসরণ করা উচিত।
তাঁর এই আদর্শের কারণে, তিনি নারী অধিকার, সমকামিতা এবং বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি নারীদের ভোটাধিকারের বিরোধী এবং সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার পক্ষপাতী।
উইলসন-এর এই রক্ষণশীল চিন্তা-ভাবনা দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালে তিনি ক্রমশ প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন।
ট্রাম্পের সমর্থক এবং রিপাবলিকান পার্টির অনেক সদস্য এখন উইলসন-এর আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় লকডাউন বিধি ভেঙে প্রতিবাদ করায় উইলসন-এর চার্চ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে, যা তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দেয়।
উইলসন-এর অনুসারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব, পেট হেজেথ। হেজেথ, যিনি উইলসন-এর চার্চের সদস্য, ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উইলসন মনে করেন, হেজেথ-এর মতো ব্যক্তিরা তাঁদের বিশ্বাসকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন, যা খুবই উৎসাহজনক।
উইলসন-এর এই কার্যক্রম সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করেন, তাঁর আদর্শ সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের জন্য বৈষম্যমূলক হতে পারে।
তাঁদের মতে, উইলসন-এর এই ধরনের চিন্তা-ভাবনা সংখ্যালঘুদের অধিকারের পরিপন্থী।
তবে, উইলসন তাঁর আদর্শের প্রতি অবিচল। তিনি মনে করেন, তাঁর লক্ষ্য হলো একটি খ্রিষ্টীয় সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে ঈশ্বরের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
তাঁর মতে, এই ধরনের সমাজে মানুষের স্বাধীনতা আরও বাড়বে।
উইলসন-এর এই আন্দোলন এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে, ওয়াশিংটনে নতুন চার্চ প্রতিষ্ঠা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা, এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন