ছোটবেলায়, বন্ধুদের মাঝে ‘খোকা’ কিংবা ‘মুনু’ নামে ডাক পাওয়াটা ছিল যেন স্বাভাবিক এক রীতি। পরিবারের আদরের এইসব নামগুলো ভালোবাসার এক অন্যরকম বহিঃপ্রকাশ ছিল। দাদা-দাদি, নানা-নানির মুখে এইসব নামে ডাক শুনতে শুনতে বড় হওয়া আমাদের অনেকেরই স্মৃতিতে গেঁথে আছে সেইসব মধুর দিনগুলো।
কিন্তু বর্তমানে, পরিচিতি এবং সামাজিকতার এই চিরায়ত রূপ কি ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে?
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ডাক নামের ব্যবহার কমে আসছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, পেশাগত ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা বজায় রাখতে এবং অন্যের অনুভূতিতে আঘাত হানার ভয়ে অনেকেই এখন আর ডাক নাম ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।
কর্মক্ষেত্রে সিনিয়রদের ‘আপা’ বা ‘ভাইয়া’ বলার চল বেড়েছে, যা হয়তো এক সময় অপরিচিত ছিল।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি ভিন্ন হলেও, পরিবর্তনের হাওয়া এখানেও লেগেছে। আগের মতো শিশুদের আদুরে নামে ডাকার প্রবণতা হয়তো কিছুটা কমেছে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে। এর পেছনে একটি কারণ হতে পারে, আধুনিক জীবনযাত্রায় মানুষের ব্যস্ততা বৃদ্ধি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব।
কর্মক্ষেত্রে আগের তুলনায় পেশাদারিত্বের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণেও ডাক নামের ব্যবহার কিছুটা সীমিত হয়েছে।
তবে, আমাদের সংস্কৃতিতে ডাক নামের গুরুত্ব এখনো অনেক। পরিবার ও বন্ধুদের মাঝে ভালোবাসার প্রকাশে, অথবা পরিচিতি সহজ করার ক্ষেত্রে এর জুড়ি মেলা ভার।
গ্রামের মানুষেরা এখনো তাদের সন্তানদের পুরোনো, পরিচিত নামে ডাকতে ভালোবাসেন। বন্ধুদের মাঝেও এই নামের ব্যবহার অটুট রয়েছে।
আপনার কি কোনো ডাক নাম আছে? কীভাবে সেই নামের উৎপত্তি হলো? নামটি কি আপনার ভালো লাগে, নাকি খারাপ? আমাদের জানান আপনার অভিজ্ঞতা।
হয়তো আপনার গল্প অন্যদেরও নতুন করে ভালোবাসার কথা মনে করিয়ে দেবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian