শিরোনাম: এক সময়ের ব্যাংক লুটেরা, এখন অপরাধীদের পথপ্রদর্শক: জো লোয়ার জীবনের গল্প
জো লোয়া নামের এক ব্যক্তির কথা, যিনি ১৯৮০-এর দশকে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন ব্যাংক লুটের সাথে জড়িত ছিলেন। পেশাগত জীবনে তিনি প্রায় দুই ডজন ব্যাংক লুট করেছিলেন, কিন্তু তার জীবনের গল্পটা শুধু অপরাধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
লোয়ার শৈশব কেটেছে চরম কষ্টের মধ্যে, বাবার কঠোর শাসন এবং মায়ের অকাল মৃত্যু তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।
ছোটবেলায় লোয়ার বাবা ছিলেন একজন ধর্মপ্রচারক, যিনি পরিবারের ওপর ধর্মীয় অনুশাসন কঠোরভাবে চাপিয়ে দিতেন। ছেলেকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার নামে প্রায়ই মারধর করতেন।
অন্যদিকে মায়ের অসুস্থতা—এই দুয়ের মাঝে লোয়ার মনে জমে ওঠে গভীর ক্ষোভ। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন।
এই ঘটনার পর যেন তার ভেতরের মানুষটা বদলে যেতে শুরু করে।
বাবা-ছেলের সম্পর্ক তিক্ত হলেও, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের মধ্যে যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। তারা দুজনেই তাদের অতীতের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হন।
লোয়া বুঝতে পারেন, তার অপরাধ জীবনের পেছনে ছিল গভীর মানসিক আঘাত আর ভীতি।
জেল থেকে বের হওয়ার পর লোয়া তার অতীত জীবনের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। তিনি লেখালিখি শুরু করেন এবং তার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লেখেন।
বর্তমানে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে শহরে বসবাস করেন এবং অপরাধ জগৎ থেকে ফেরা মানুষদের পরামর্শ দেন।
তিনি তাদের অতীত জীবনের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজে ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেন।
লোয়ার জীবন কোনো ‘মুক্তির গল্প’ নয়, বরং এটি একটি জটিল যাত্রা। তিনি মনে করেন, তার জীবনের প্রতিটি ঘটনা, ভালো-মন্দ অভিজ্ঞতা—সবকিছুই তাকে আজকের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
যারা অপরাধের পথে পা বাড়িয়েছে, তাদের জীবনেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে—এই বিশ্বাস নিয়েই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
তার এই যাত্রা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে, যারা জীবনের কঠিন পথ পাড়ি দিতে সংগ্রাম করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন