ব্যাংকসির ‘ভাঙা হৃদয়’ : নিলামে উঠছে নিউইয়র্কের দেয়ালে আঁকা শিল্পকর্ম!

নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে একসময় একটি পরিত্যক্ত গুদামঘরের দেয়ালে আঁকা হয়েছিল বিশ্ববিখ্যাত শিল্পী ব্যাঙ্কসির একটি বিশেষ চিত্রকর্ম। হৃদ আকৃতির একটি বেলুনের ওপর ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় ফুটিয়ে তোলা এই শিল্পকর্মটি ২০১৬ সালে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।

তবে এবার নিলামে উঠতে যাচ্ছে সেই দেয়ালের অংশটি, যেখানে এখনো বিদ্যমান রয়েছে ব্যাঙ্কসির সেই বিখ্যাত চিত্রকর্ম।

২০১৩ সালে ব্রুকলিনের রেড হুক এলাকায় এই চিত্রকর্মটি তৈরি করেন শিল্পী ব্যাঙ্কসি। তিনি সাধারণত অনুমতি না নিয়েই শহরের বিভিন্ন স্থানে তাঁর শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তোলেন। ‘ব্রোকেন হার্ট’ নামের এই শিল্পকর্মটি দ্রুতই সকলের নজর কাড়ে।

হৃদয়ের ওপর ব্যান্ডেজের চিত্রটি যেন ভালোবাসার ক্ষত এবং তা সারিয়ে তোলার এক দারুণ প্রতীকী রূপ।

কিন্তু এর কিছু দিন পরেই, এই ছবিটির পাশে ‘ওমর এনওয়াইসি’ লিখে দেয় কিছু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। এরপর আরও কয়েকজন তাদের নিজস্ব শৈলীতে সেখানে কিছু যোগ করে, যা এক প্রকার শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর লড়াই হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

দেয়ালের এই অংশটি যেন এক ভিন্ন ধরনের ক্যানভাসে পরিণত হয়, যেখানে একাধিক শিল্পীর ছোঁয়া লেগেছে।

যে গুদামঘরের দেয়ালে এই চিত্রকর্মটি ছিল, সেটি একসময় মারিয়া জর্জিয়াডিস নামের এক নারীর পরিবারের মালিকানাধীন ছিল।

তাঁর বাবা ভাসিলিয়স জর্জিয়াডিস সেই গুদামঘরের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। বাবার স্মৃতি হিসেবে এবং শিল্পকর্মটিকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে, মারিয়া দেয়ালের ওই অংশটি সংরক্ষণ করেন।

বর্তমানে সেই অংশটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আগামী ২১শে মে নিউ ইয়র্কের একটি নিলাম ঘর, গার্নসিতে এই শিল্পকর্মটি নিলামে তোলা হবে। মারিয়া জানিয়েছেন, তাঁর বাবা এই শিল্পকর্মটিকে খুব ভালোবাসতেন।

বাবার মৃত্যুর পর, তাঁর স্মৃতিকে সম্মান জানাতে এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনে অর্থ সাহায্য করার উদ্দেশ্যে, নিলামের আয়োজন করা হয়েছে।

জানা গেছে, এই দেয়ালের ওজন প্রায় চার টনের বেশি এবং উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট।

ব্যাঙ্কসির এই ধরনের কাজ সাধারণত গোপনে করার কারণে, এর সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা কঠিন। তবে, ২০১৬ সালে লন্ডনে ব্যাঙ্কসির ‘গার্ল উইথ বেলুন’ সিরিজের একটি চিত্রকর্ম নিলামে ১.৪ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হওয়ার পরে, তা নিলামের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়।

সেই ঘটনার পর, এই ‘ব্রোকেন হার্ট’-এর নিলাম নিয়ে শিল্পবোদ্ধাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মারিয়া জর্জিয়াডিস আশা করেন, এই শিল্পকর্মটি যিনি কিনবেন, তিনি যেন তাঁর বাবার মতো এর সৌন্দর্য ও গভীরতা অনুভব করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *