আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার জয় করলেন ভারতীয় লেখিকা বানু মুশতাক। তাঁর ছোট গল্পের সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’-এর জন্য এই সম্মাননা। লেখিকা একইসঙ্গে আইনজীবী ও সমাজকর্মী। তাঁর এই বিজয়ে উচ্ছ্বসিত সাহিত্য জগৎ।
কর্নাটকের বাসিন্দা বানু মুশতাক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক মানুষের কথা লেখায় তুলে ধরেছেন। তাঁর গল্পের মূল বিষয় নারী, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ এবং তাদের অধিকার। ‘হার্ট ল্যাম্প’-এ তিনি মুসলিম নারীদের জীবন এবং তাঁদের উপর হওয়া নানান নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেছেন, যা পাঠককে নাড়া দেয়।
তাঁর লেখায় নারীর প্রতি হওয়া পারিবারিক সহিংসতা, শিশুদের মৃত্যু, সামাজিক বৈষম্যের মতো বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এই পুরস্কার তাঁর এবং অনুবাদক, দীপা বাস্থির যৌথ অর্জন। উল্লেখ্য, ‘হার্ট ল্যাম্প’ এমন একটি গল্পের সংকলন যা এর আগে কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কার জেতেনি।
৭৬ বছর বয়সী বানু মুশতাক এই পুরস্কার জয়ী লেখকদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ। ১৯৮১ সাল থেকে তিনি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত।
বানু মুশতাকের আইন ও সমাজকর্মীর জীবন তাঁর লেখার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। তিনি বলেন, যখন মানুষ তাঁর কাছে আইনি সহায়তা চেয়ে আসে, তখন তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা শোনেন। সেই অনুভূতিগুলোই পরবর্তীতে তাঁর গল্পের জন্ম দেয়। তাঁর মতে, গল্প মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে পারে, যা সমাজে পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে।
বানু মুশতাকের সাহিত্যকর্ম সবসময়ই ভারতে জনপ্রিয়। তবে, তাঁর স্পষ্টভাষিতার কারণে মাঝে মাঝে তিনি বিতর্কের শিকারও হয়েছেন। ২০০০ সালে, তিনি একটি ফতোয়ার শিকার হয়েছিলেন, কারণ তিনি বলেছিলেন যে ইসলামে নারীদের মসজিদে প্রবেশে কোনো বাধা নেই।
বানু মুশতাকের মতে, ভারতে নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন এসেছে। তবে, পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে এখনো অনেক সমস্যা বিদ্যমান। তিনি মনে করেন, সমাজের অগ্রগতির জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান