আয়ারল্যান্ডের জনপ্রিয় অভিনেতা ব্যারি কেওঘানের মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। হলিউড বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে, কেওঘান তার জীবনের কঠিন কিছু মুহূর্তের কথা জানিয়েছেন, বিশেষ করে শৈশবে মায়ের হেরোইন আসক্তির কারণে তার জীবন কেমন ছিল, সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
৩২ বছর বয়সী এই অভিনেতা জানান, ১২ বছর বয়সে তিনি মাকে হেরোইন আসক্তির কারণে হারান। মায়ের মৃত্যুর পর মাদক থেকে দূরে থাকতে চাইলেও, একসময় তিনিও এর প্রতি আকৃষ্ট হন। কেওঘান স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন, তিনি একজন মাদকাসক্ত এবং এই বিষয়টি তিনি এখন সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
সাক্ষাৎকারে কেওঘান বলেন, “আমি এখন আর কোনো কিছু অস্বীকার করি না। আমি বুঝি যে আমার আসক্তি রয়েছে এবং আমি একজন মাদকাসক্ত।” তিনি আরও যোগ করেন, “যখন আপনি এটা মেনে নিতে পারেন, তখনই আপনি এগিয়ে যেতে শুরু করেন এবং এর সঙ্গে কিভাবে মানিয়ে নিতে হয়, সেই বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেন।”
ব্যারি কেওঘান মনে করেন, হলিউডে আসার পর তার উপর অনেক চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমার শরীরে এর প্রমাণ রয়েছে। মাদক ব্যবহারের কারণেই এমনটা হয়েছে।” বর্তমানে তিনি শান্তিতে আছেন এবং নিজের প্রতিটি কাজের জন্য দায়ী বলেও জানান।
তিনি আরও বলেন, এখন তিনি সবকিছুকে গ্রহণ করতে শিখেছেন এবং একজন ভালো মানুষ হিসেবে জীবন অতিবাহিত করার চেষ্টা করছেন।
অভিনেতা জানান, ছোটবেলায় তিনি মায়ের মাদকাসক্তির কারণে অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করতে পারি, যখন আমরা ছোট ছিলাম, তখন মা মাদক কেনার জন্য টাকা জোগাড় করতে চাইতেন এবং আমাদের জন্য দরজার বাইরে চিৎকার করতেন। তখন আমাদের বলা হতো, ঘরের ভেতরে থাকতে এবং মায়ের কাছে যেতে নিষেধ করা হতো।”
কেওঘানের ভাষ্যমতে, সন্তানের বাবা হওয়ার পর তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছেন, তার মায়ের জীবন কতটা কঠিন ছিল। তিনি বলেন, “আমার নিজের সন্তান হওয়ার পর আমি বুঝতে পেরেছি, আমার মা এবং বাবার জন্য এটা কতটা কঠিন ছিল। সৌভাগ্যবশত, তখন একটি ভালো পরিচর্যা ব্যবস্থা ছিল, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
ব্যারি কেওঘান, যিনি ‘সল্টবার্ন’ (Saltburn) সহ আরও অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, তার এই সাহসী স্বীকারোক্তি নিঃসন্দেহে অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। জীবনের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কিভাবে একজন মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে পারে, ব্যারি কেওঘান যেন তারই উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: পিপল