ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া বিলাসবহুল ‘বেয়েসিয়ান’ নামের একটি বিশাল ইয়টের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে ইতালির সিসিলি উপকূলের কাছে এক ঝড়ের কবলে পড়ে এটি ডুবে যায়।
এতে ৭ জন প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাইকেল লিন্চ এবং তার মেয়ে হান্নাহ। উদ্ধারকারীরা এরই মধ্যে ইয়টের একটি অংশ, বুম (mast-এর সঙ্গে যুক্ত অংশ) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, প্রায় ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এই ইয়টটি ডুবে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে কর্তৃপক্ষ। বুমটি ছিল একটি বিশাল পালের অংশ, যা ৭২ মিটার লম্বা ছিল।
এটি ছিল কোনো সেলিং ইয়টের সবচেয়ে উঁচু মাস্তুলগুলোর মধ্যে অন্যতম।
উদ্ধার কাজের সময়, গত ৯ই মে, ডাচ ডুবুরি রবকোর্নেলিস মারিয়া হুইবেন ইউবেন-এর মৃত্যু হয়। বুমটি জাহাজ থেকে আলাদা করার সময় একটি বিস্ফোরণে তার মৃত্যু হয়।
ইতালীয় কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডুবুরির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য বুম উদ্ধারের বিষয়টি তদন্তের অংশ হবে।
জানা গেছে, ৫৬ মিটার লম্বা ইয়টটিতে তখনও ১৮ হাজার লিটার জ্বালানি ছিল। ১৯শে আগস্টের ঝড়ে এটি পোর্টিক্লোর কাছে ডুবে যায়।
১৫ জন যাত্রী, যাদের মধ্যে ৯ জন ক্রু মেম্বার ছিলেন, তারা জীবিত ফিরে আসেন।
ব্রিটিশ তদন্তকারীরা দুর্ঘটনার কয়েক দিন পরেই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে জাহাজের কাঠামোগত সমস্যার কারণে এটি ডুবে গিয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে ইতালীয় তদন্তকারীরা এই যুক্তির সঙ্গে একমত নন। তাদের মতে, পুরো জাহাজটি পানি থেকে তোলার পরেই দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।
ধারণা করা হচ্ছে, ইয়টের ভেতরে লিন্চের কিছু সুরক্ষিত ভল্ট ছিল, যেখানে তিনি অত্যন্ত গোপনীয় হার্ড ড্রাইভ রেখেছিলেন। তবে জাহাজটি সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার না করা পর্যন্ত এর সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
ইতিমধ্যে, ইয়টের ক্যাপ্টেন জেমস কাটফিল্ড এবং আরও দুই ক্রু সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আগামী ২৬ থেকে ২৮ মের মধ্যে খারাপ আবহাওয়া না থাকলে, ইয়টের মূল কাঠামোটি সমুদ্রের তলদেশ থেকে তোলার কথা রয়েছে।
এরপর টার্মিনি ইমেরিসের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং কর্মকর্তারা সেটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম