বিটল গাড়িতে তরুণীর খুন: ফিঙ্গারপ্রিন্টে ঘাতক, চাঞ্চল্যকর!

প্রায় পঞ্চাশ বছর আগের একটি হত্যাকাণ্ডের জট অবশেষে খুলল আধুনিক ফরেনসিক প্রযুক্তির কল্যাণে। ১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান জোসে শহরে ২৪ বছর বয়সী জ্যানেট র্যালস্টন নামের এক তরুণীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল।

সম্প্রতি, এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৬৯ বছর বয়সী উইলি ইউজিন সিমসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ১৯৭৭ সালের ৩১শে জানুয়ারি, জ্যানেটকে শেষবার একটি বারে দেখা গিয়েছিল।

পরের দিন, তার মরদেহ পাওয়া যায় গাড়ির পেছনের সিটে, যেখানে তার গলায় একটি শার্ট বাঁধা ছিল। ময়নাতদন্তে জানা যায়, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং যৌন নিপীড়নও করা হয়েছিল।

ঘটনার তদন্তে প্রথমে তেমন কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি।

কিন্তু, সময়ের সাথে সাথে, প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে মামলার মোড় ঘুরে যায়। ঘটনার দীর্ঘকাল পর, ২০১৯ সালে, পুরনো মামলার আলামতগুলো আবারও পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

একটি সিগারেটের প্যাকেটের ওপর পাওয়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট, যা আগে শনাক্ত করা যায়নি, তা আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্তকরণ প্রযুক্তির মাধ্যমে মিলে যায় উইলি ইউজিন সিমসের সঙ্গে। এই সূত্র ধরেই তদন্তকারীরা এগিয়ে যান।

পরবর্তীতে, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জ্যানেটের নখের নিচে এবং তার শ্বাসরোধ করার জন্য ব্যবহৃত শার্টে সিমসের ডিএনএ পাওয়া যায়।

তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার সময় সিমস সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার পর তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ছেড়ে যান।

১৯৭৮ সালে, তিনি অন্য একটি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন এবং কারাদণ্ড ভোগ করেন। তবে, ডিএনএ ডেটাবেস তৈরি হওয়ার আগে তিনি রাজ্য ত্যাগ করেন, যার ফলে তাকে সহজে শনাক্ত করা যায়নি।

সান্তা ক্লারা কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ডিএনএ পরীক্ষার ফল আসার পরেই তারা সিমসকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

বর্তমানে, সিমসকে কোনো জামিন ছাড়াই আটক রাখা হয়েছে এবং আগামী ১২ই আগস্ট তার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

দোষী সাব্যস্ত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, সময়ের সাথে সাথে উন্নত ফরেনসিক বিজ্ঞান অপরাধীদের খুঁজে বের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *