প্রখ্যাত অভিনেত্রী বেলা রামসে, যিনি ‘দ্য লাস্ট অফ আস’ (The Last of Us) এবং ‘গেম অফ থ্রোনস’-এর (Game of Thrones) মতো জনপ্রিয় সিরিজে অভিনয় করেছেন, সম্প্রতি তাঁর জীবনের একটি কঠিন অধ্যায় নিয়ে কথা বলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, একসময় বমি হওয়ার তীব্র ভয়ের কারণে তিনি মাসের পর মাস ঘরবন্দী ছিলেন।
এই মানসিক অবস্থাটি ‘এমেটোফোবিয়া’ (Emetophobia) নামে পরিচিত, যা বমি হওয়ার প্রবল ভয়ের সঙ্গে জড়িত। একথা জানিয়েছেন ২১ বছর বয়সী রামসে, যিনি এই বিষয়ে ‘দ্য লুইস থেরক্স পডকাস্ট’-এ (The Louis Theroux Podcast) বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
রামসে জানিয়েছেন, এই ভয়ের কারণে বাইরের জগৎকে তিনি সবসময় উদ্বেগের চোখে দেখতেন। সামান্য অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিলেই বা অন্য কাউকে অসুস্থ দেখলে, তাঁর মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হতো।
রামসে আরও জানান, এই ফোবিয়া থেকে মুক্তি পেতে তিনি ‘দ্য থ্রাইভ প্রোগ্রাম’-এর (The Thrive Program) সাহায্য নিয়েছেন। যদিও এখন তিনি নিজেকে আগের চেয়ে ভালো অনুভব করেন, তবে বমির প্রতি তাঁর স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে কিছুটা বেশি প্রতিক্রিয়া হয়।
এমনকি, সামান্য অসুস্থতার ধারণা থেকেও তাঁর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হতে পারে। রামসে বুঝিয়ে বলেন, এই ভয়ের কারণে তিনি সবসময় অসুস্থতা নিয়ে চিন্তা করতেন।
রাস্তায় বের হলে বা গণপরিবহনে উঠলে যদি তাঁর অসুস্থ লাগে, তাহলে কি হবে—এই ধরনের চিন্তা তাঁকে আচ্ছন্ন করে রাখত। ১৩ বছর বয়সে এমনও সময় গেছে, যখন তিনি ঘর থেকে বের হতে পারতেন না।
বাইরের সবকিছুকেই তাঁর কাছে ভীতিকর মনে হতো। ঘরের ভেতরেও সব সময় নিরাপদ ছিলেন না তিনি। তাঁর মনে হতো, বাইরের জগতের জীবাণু জুতার মাধ্যমে ঘরে প্রবেশ করতে পারে এবং এর থেকে তিনি সংক্রমিত হতে পারেন।
এমনকি, জামাকাপড়ের সঙ্গেও সেই জীবাণু লেগে থাকার সম্ভাবনা তাঁর উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে দিত। যদিও রামসে এখন বুঝতে পারেন, এই ভয়টা সম্পূর্ণভাবে যুক্তিসঙ্গত ছিল না, তবে সেসময় এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া তাঁর জন্য কঠিন ছিল।
তিনি জানান, এই ভয়ের কারণে এমন একটা সময় এসেছিল যখন তিনি বমি করার চেয়ে মৃত্যুকেও শ্রেয় মনে করতেন। বর্তমানে বেলা রামসে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন এবং তাঁর এই অভিজ্ঞতা অন্যদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে উৎসাহিত করবে।
আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে, এবং এই ধরনের আলোচনা সেই সচেতনতা আরও বাড়াতে সাহায্য করে। তথ্য সূত্র: পিপল