বারমুডা ভ্রমণে সমুদ্রের বদলে অন্য কিছু! শীতের ছুটিতেও কি মজা?

আবহাওয়ার অন্য রূপে বারমুডা: শীতের ছুটিতেও কি ঘুরে আসা যায়?

উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে অবস্থিত বারমুডা, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের একটি অংশ। সাধারণত এখানকার সমুদ্র সৈকত আর উজ্জ্বল রোদ আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। তবে যারা অন্যরকম ভ্রমণের স্বাদ নিতে চান, তাদের জন্য শীতকালে বারমুডা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হতে পারে অসাধারণ।

শীতকালে এখানকার আবহাওয়া বেশ হালকা থাকে, যা অনায়াসে ঘুরে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, যখন শীতের আমেজ থাকে, তখনও বারমুডার আকর্ষণ কম থাকে না। সমুদ্রের শীতলতা হয়তো সাঁতার কাটার জন্য উপযুক্ত নয়, তবে এই সময়ে অন্য অনেক কিছুই উপভোগ করার সুযোগ থাকে। গরম পোশাক পরে এখানকার সংস্কৃতি, ইতিহাস আর প্রকৃতির স্বাদ নেওয়া যেতে পারে।

এখানে শীতকালে উপভোগ করার মতো কিছু অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হলো:

১. ক্রিস্টাল ও ফ্যান্টাসি গুহা: বারমুডার অন্যতম আকর্ষণ হলো এই দুটি গুহা। ভিতরে প্রবেশ করলে চুনাপাথরের স্তূপ আর স্বচ্ছ জলের দৃশ্য যে কারো চোখ জুড়িয়ে দেবে। গুহার ভিতরে হেঁটে বেড়ানোর জন্য টিকিট কেটে গাইড নিতে হয়।

প্রতিটি গুহার জন্য প্রায় ২,৫০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী)। বৃষ্টির দিনেও এই গুহাগুলো ভ্রমণের জন্য চমৎকার।

২. যোগাভ্যাস: অনেক হোটেলেই যোগা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকে। স্থানীয় যোগা ক্লাসে অংশ নিলে স্থানীয় সংস্কৃতি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়।

৩. গুহার ভেতরে ম্যাসাজ: এখানকার “গ্রোটো বে” (Grotto Bay)- তে গুহার ভিতরে ম্যাসাজের ব্যবস্থা রয়েছে, যা একইসঙ্গে আরামদায়ক এবং অন্যরকম অভিজ্ঞতা দিতে পারে।

৪. ঐতিহ্যবাহী পানীয়: বারমুডার “দ্য সুইজল ইন”-এ (The Swizzle Inn) তৈরি হয় বিখ্যাত “রাম সুইজল” (Rum Swizzle)। এছাড়াও “ডার্ক ‘n’ স্টর্মি” (Dark ‘n’ Stormy) এখানকার আরেকটি জনপ্রিয় পানীয়। তবে মনে রাখতে হবে, পানীয় পানের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের রুচি ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

৫. স্থানীয় খাবার: বারমুডার খাদ্যরসিকদের জন্য দারুণ সব আয়োজন রয়েছে। “দ্য লরেন” (The Loren)-এর মতো হোটেলগুলোতে প্রায়ই বিভিন্ন দেশের নামকরা শেফ-দের আনা হয়, যেখানে নানা ধরণের খাবারের স্বাদ উপভোগ করা যায়। এছাড়া, ফ্ল্যাটস ভিলেজের “ভিলেজ প্যান্ট্রি” (Village Pantry)-তে ব্রাঞ্চের জন্য স্থানীয়দের ভিড় দেখা যায়।

পুরনো দিনের স্বাদ পেতে ঐতিহাসিক “টম মুরের’স টেভার্ন”-এ (Tom Moore’s Tavern) ডিনার করা যেতে পারে। এখানকার “বারমুডিয়ান ফিশ স্যান্ডউইচ”-এর (Bermudian Fish Sandwich) স্বাদ নিতে ভুলবেন না।

৬. স্কুটার ভাড়া করে ঘুরে বেড়ানো: বারমুডায় নিজস্ব গাড়ি রাখার অনুমতি সীমিত। তাই এখানকার রাস্তাগুলোতে স্কুটার বেশ জনপ্রিয়। স্কুটার ভাড়া করে এখানকার সুন্দর রাস্তা ধরে ঘুরে বেড়ানো এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে।

৭. হ্যামিলটনে ভ্রমণ: বারমুডার রাজধানী হ্যামিলটনে (Hamilton) কেনাকাটা এবং ঘোরার অনেক সুযোগ রয়েছে। এখানকার “ফ্রন্ট স্ট্রিট”-এ (Front Street) হেঁটে বেড়ানো যেতে পারে।

“হ্যামিলটন প্রিন্সেস & বিচ ক্লাব”-এ (Hamilton Princess & Beach Club) পাবলো পিকাসো, আঁরি মাতিস, অ্যান্ডি ওয়ারহল ও ব্যাঙ্কসির মতো শিল্পীদের চিত্রকর্ম দেখা যেতে পারে।

৮. পারফিউম তৈরি: সেন্ট জর্জে অবস্থিত “লিলি বারমুডা পারফিউমারি”-তে (Lili Bermuda Perfumery) নিজের পছন্দের সুগন্ধী তৈরির সুযোগ রয়েছে। এখানে বারমুডার স্থানীয় উদ্ভিদ থেকে তৈরি সুগন্ধীর সংগ্রহও দেখা যেতে পারে।

সাধারণত শীতকালে বারমুডার সমুদ্র সৈকতে ভিড় কম থাকে, তবে এই সময়ে অন্য অনেক আকর্ষণ উপভোগ করার সুযোগ থাকে।

যারা একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেতে চান, তাদের জন্য অফ সিজনে বারমুডা ভ্রমণ হতে পারে একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল + লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *