বাইডেন: ট্রাম্পের ‘আধুনিক যুগের তোষণ’ নীতির কড়া সমালোচনা!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া বিষয়ক নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। বাইডেন একে ‘আধুনিক কালের তোষণ নীতি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে এবং এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সম্পর্ক দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ট্রাম্পের রাশিয়া বিষয়ক নীতি ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসী মনোভাবকে উৎসাহিত করবে। বাইডেনের মতে, যদি ইউক্রেনকে ভূমি ছাড় দিতে রাজি করানো হয়, তাহলে পুতিন সেখানেই থামবেন না। তিনি সরাসরি ট্রাম্পের এমন প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন, যেখানে ইউক্রেনকে ভূমি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বাইডেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্পের রাশিয়া নীতিকে ১৯৩০-এর দশকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নেভিল চেম্বারলেনের হিটলারকে ‘তোষণ নীতির’ সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ট্রাম্পের নীতি গ্রহণের ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো আমেরিকার নেতৃত্ব এবং নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে উঠবে।

বাইডেন মনে করেন, এর ফলস্বরূপ বিশ্বজুড়ে মিত্র দেশগুলো দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে।

সাক্ষাৎকারে বাইডেন ট্রাম্পের বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন। তিনি ট্রাম্পের পানামা খাল ফিরিয়ে নেওয়া, কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার প্রস্তাব এবং গ্রিনল্যান্ড দখলের মতো মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান।

বাইডেন বলেন, একজন প্রেসিডেন্টের এমন কথা বলা উচিত নয়।

ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ এবং তাদের ব্যবহারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে দেরি করার বিষয়ে ওঠা সমালোচনার জবাবে বাইডেন বলেন, তারা ইউক্রেনকে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করেছেন।

বাইডেন আরও জানান, রাশিয়ার আগ্রাসন রুখতে তারা আরও জোরালো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত ছিলেন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসার প্রসঙ্গে বাইডেন জানান, তিনি সঠিক সময়ে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। যদিও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল।

বাইডেনের এই মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তাদের মতে, বাইডেনের এই সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও প্রভাবিত করবে এবং এর প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হবে।

বিশেষ করে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাইডেনের এই বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাইডেনের এই মন্তব্যের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ট্রাম্পের নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *