যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সম্প্রতি প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁর শরীরে রোগের বিস্তার ঘটেছে এবং চিকিৎসকেরা এখন তাঁর চিকিৎসার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করছেন।
বাইডেনের দপ্তর থেকে রবিবার এই তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, বাইডেনের প্রস্রাবের সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল। এরপর চিকিৎসকেরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং প্রোস্টেট গ্রন্থিতে একটি অস্বাভাবিকতা খুঁজে পান।
পরীক্ষার ফল অনুযায়ী, তাঁর ক্যান্সার হয়েছে এবং তা শরীরের অন্য অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এটি পুরুষদের মধ্যে ক্যান্সারে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, প্রতি আটজন পুরুষের মধ্যে একজনের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রোস্টেট গ্রন্থি পুরুষের প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ। এটি বীর্যের জন্য তরল তৈরি করে।
এই গ্রন্থিটি মূত্রাশয়ের নিচে অবস্থিত এবং ইউরেথ্রা বা মূত্রনালীকে ঘিরে থাকে। এই নালী দিয়েই প্রস্রাব ও বীর্য শরীর থেকে বের হয়।
বাইডেনের ক্যান্সার যেহেতু শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে, তাই এটি প্রাথমিক পর্যায়ের ক্যান্সারের চেয়ে গুরুতর।
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল ব্রাইগহাম ক্যান্সার সেন্টারের চিকিৎসক ড. ম্যাথিউ স্মিথ জানিয়েছেন, “এই ক্যান্সার চিকিৎসাযোগ্য, তবে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা কঠিন।”
চিকিৎসকেরা সাধারণত হরমোন থেরাপির মাধ্যমে প্রোস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসা করেন। এই থেরাপির মাধ্যমে শরীরে হরমোনের মাত্রা কমানো বা ক্যান্সার কোষ পর্যন্ত হরমোন পৌঁছানো বন্ধ করা যায়।
এর ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিও ধীর হয়ে আসে। ড. স্মিথ আরও জানান, “এই পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ পুরুষকে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয় এবং তাঁদের অস্ত্রোপচার বা রেডিওথেরাপির পরামর্শ দেওয়া হয় না।”
ক্যান্সারের আক্রমণাত্মকতা নির্ধারণের জন্য গ্লিসন স্কোর ব্যবহার করা হয়। এই স্কোর ৬ থেকে ১০ পর্যন্ত হতে পারে।
বাইডেনের ক্ষেত্রে এই স্কোর ৯, যা ইঙ্গিত করে যে তাঁর ক্যান্সার বেশ আগ্রাসী।
স্বাস্থ্য বিষয়ক খবর পরিবেশনকারী সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, হাওয়ার্ড হিউজ মেডিকেল ইনস্টিটিউটস সায়েন্স অ্যান্ড এডুকেশনাল মিডিয়া গ্রুপ এবং রবার্ট উড জনসন ফাউন্ডেশন এই সংবাদ পরিবেশনে সহায়তা করেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস