আর্টের জগৎ থেকে ফ্যাশন পর্যন্ত, সাঁতারের পোশাকের এক শতবর্ষের ইতিহাস নিয়ে লন্ডনের ডিজাইন মিউজিয়ামে শুরু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী। ‘সাপ্ল্যাশ! এ সেঞ্চুরি অফ সুইমিং অ্যান্ড স্টাইল’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে সাঁতারের পোশাকের বিবর্তন, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি এবং সমাজের পরিবর্তনের এক উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এই প্রদর্শনীতে ১৯৪৬ সালে বিকিনি আবিষ্কারের প্রেক্ষাপট আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, যখন পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চলছিল, ঠিক তখনই ফ্রান্সে লুই রেয়ার্ড নামের এক ডিজাইনার তৈরি করেন যুগান্তকারী দুই-টুকরোর সাঁতারের পোশাক, যা “বিকিনি” নামে পরিচিতি লাভ করে।
এই পোশাকটি ছিল তখনকার সময়ের সবচেয়ে ছোট এবং আলোচনার বিষয়। এরপর, পুরুষদের সাঁতারের পোশাকেও আসে পরিবর্তন।
প্রদর্শনীতে অলিম্পিকে ব্যবহৃত স্পিডোর তৈরি করা এলজেডআর রেসার সাঁতারের পোশাকের উদ্ভাবন এবং এর বিতর্কিত দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। নাসা’র বিজ্ঞানীদের সহায়তায় তৈরি এই পোশাকটি ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে ব্যবহৃত হয়েছিল।
এই পোশাকটি সাঁতারুদের জন্য নতুন রেকর্ড তৈরি করতে সহায়ক হলেও, এর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের কারণে সমালোচিতও হয়েছিল।
প্রদর্শনীতে শুধু পোশাকের ইতিহাসই নয়, বরং এই পোশাকগুলোর সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার সম্পর্কও তুলে ধরা হয়েছে। এখানে, বিভিন্ন ধরনের সাঁতারের পোশাকের নকশা, যেমন—পুরুষদের জন্য ‘বাজেট স্মাগলার’ থেকে শুরু করে, লিঙ্গ-নিরপেক্ষ সাঁতারের পোশাক এবং ট্রান্সজেন্ডার নারীদের জন্য বিশেষ ডিজাইন করা পোশাকও স্থান পেয়েছে।
সাঁতারের পোশাকের এই বিবর্তন শুধু ফ্যাশনের অংশ নয়, বরং এটি সামাজিক পরিবর্তনেরও একটি প্রতিচ্ছবি। প্রদর্শনীতে পামেলা অ্যান্ডারসনের ‘বেওয়াচ’-এর পোশাকের পাশাপাশি, মারমেইড বা জলপরীর পোশাকের মতো আধুনিক সংস্কৃতির অনুষঙ্গও তুলে ধরা হয়েছে।
সাঁতারের পোশাকের এই প্রদর্শনী দর্শকদের ফ্যাশন, প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতির এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়। প্রদর্শনীটি আগামী ১৭ আগস্ট পর্যন্ত লন্ডনের ডিজাইন মিউজিয়ামে চলবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান