মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা নিয়ে সরব হয়েছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা, এই পদক্ষেপের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যানসহ আরও অনেকে মনে করছেন, এই শুল্কনীতি বাস্তবায়ন হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।
জানা গেছে, ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে এমন দেশগুলোর ওপর তিনি নতুন করে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করবেন। এই ঘোষণার পরেই বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ার বাজারে দরপতন দেখা যায়।
বিল অ্যাকম্যান এক সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে একে ‘অর্থনৈতিক পারমাণবিক যুদ্ধের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার মতে, নতুন শুল্ক আরোপের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়বে, ভোক্তারা জিনিসপত্র কেনা কমিয়ে দেবেন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে।
শুধু অ্যাকম্যানই নন, জেপি মরগান চেজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেমি ডিমনও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, শুল্কের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এবং বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে যেতে পারে।
বিনিয়োগকারী স্ট্যানলি ড্রুকেনমিলার ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করেছেন। এমনকি বিশ্বের শীর্ষ ধনী এবং ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থক ইলন মাস্কও ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য জোনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এর ফলে নতুন করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তারা দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছেন।
ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের ওপরও নতুন করে শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি চলছে, যা তাদের জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের মধ্যে চলা অসম বাণিজ্য সম্পর্ককে সুষম করা। তবে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্ব বাজারে তাদের ভাবমূর্তি দুর্বল হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা তারই প্রমাণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন